কক্সবাজারের উখিয়ায় বন কর্মকর্তা সাজ্জাদুজ্জামান হত্যার অন্যতম প্রধান পরিকল্পনাকারী মো. কামালসহ আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল সোমবার রাতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ও উখিয়ায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের হরিণমারা এলাকার শাহ আলমের ছেলে মো. কামাল উদ্দিন (৩৯) ও একই এলাকার নুর আলমের ছেলে হেলাল উদ্দিন (২৭)।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে র্যাব ১৫-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। তিনি জানান, সংরক্ষিত বনাঞ্চলে অভিযানে গিয়ে পাহাড়খেকো মাটি পাচারকারী চক্রের গাড়িচাপায় নিহত হন বন বিভাগের বিট কর্মকর্তা সাজ্জাদুজ্জামান। এ ঘটনার পরপরই র্যাব পাহাড়ের মাটি পাচারকারী চক্রের বিরুদ্ধে তদন্তে নামে।
গতকাল সোমবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের একটি দল হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী মো. কামালকে চট্টগ্রাম সীতাকুণ্ড থেকে এবং হত্যার সহযোগী হেলালকে উখিয়ার কোটবাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃতদের বরাতে র্যাব জানিয়েছে, মাটি পাচারকারীদের বিরুদ্ধে পরপর পাঁচটি অভিযান পরিচালনাসহ বেশ কয়েকটি ডাম্পট্রাক আটক ও মামলা করেন ওই বন কর্মকর্তা। এরই প্রতিশোধ নিতে গিয়ে বন কর্মকর্তা সাজ্জাদুজ্জামানকে ডাম্পট্রাকে চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়।
র্যাবের অধিনায়ক জানান, ২৯ মার্চ গ্রেপ্তার কামালের একটি ডাম্পট্রাক আটক করে মামলা দেন বন কর্মকর্তা সাজ্জাদ। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কামালসহ তাঁদের পাহাড়খেকো চক্র তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
এর আগে ৮ মার্চ পুলিশ চট্টগ্রাম শহরে অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামি ডাম্পট্রাকচালক মো. বাপ্পিকে গ্রেপ্তার করে। এ নিয়ে চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত চার আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই দুই আসামিও পাহাড় কাটতে বাধা পেয়ে পরিকল্পিতভাবে বন কর্মকর্তাকে হত্যার সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে।
গত ৩১ মার্চ দিবাগত রাতে উখিয়ায় সংরক্ষিত বনের পাহাড় কেটে মাটি পাচারের সময় মাটি পাচারকারীদের ডাম্পট্রাকের চাপায় বনবিট কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদুজ্জামান (৩০) নিহত হন। তিনি কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের উখিয়া রেঞ্জের দোছড়ি বনবিটের বিট কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন এবং মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার মোহাম্মদ শাহজাহানের ছেলে তিনি।
এ ঘটনার পরদিন ১০ জনের নাম উল্লেখ করে ১৫ জনের বিরুদ্ধে উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. শফিউল আলম বাদী হয়ে উখিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।