রাঙামাটির কাপ্তাই লেকের পানির ওপর নির্ভর করে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎকেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। লেকে যত বেশি পানি থাকবে, বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ তত বৃদ্ধি পাবে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে কাপ্তাই লেক যখন পানিতে টইটম্বুর থাকে, তখন কাপ্তাই জলবিদ্যুৎকেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিট পুরোদমে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার করা হয়। পাঁচটি ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা ২৪০ মেগাওয়াট, যা দেশের একমাত্র জলবিদ্যুৎকেন্দ্র।
তবে বৃষ্টি না হওয়ায় গত বছরের ডিসেম্বর ও চলতি জানুয়ারি মাস থেকে ধীরে ধীরে কাপ্তাই লেকে পানির পরিমাণ কমতে থাকে। ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে আরও পানির পরিমাণ কমে যায়। ফলে টানা খরায় কাপ্তাই লেকে পানির স্তর কমে যাওয়ায় বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৪ ও ৫ নম্বর ইউনিট দুটি বন্ধ রাখা হয়েছে। পানির স্তর আরও কমলে অন্য কয়েকটি ইউনিটও বন্ধ রাখতে হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ।
আপাতত বৃষ্টির কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বৃষ্টি না হলে কাপ্তাই লেকে পানি বৃদ্ধিরও কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এ টি আবদুজ্জাহের। তিনি বলেন, সচরাচর ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে বৃষ্টি হয় না। প্রতিবছর খরার এই সময় কাপ্তাই লেকে পানি কমে যায়। তখন কর্তৃপক্ষ বিদ্যুৎ উৎপাদনে ইউনিটের সংখ্যা কমিয়ে দেয়।
আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে কাপ্তাই বিদ্যুৎকেন্দ্রের কন্ট্রোলরুমের দায়িত্বরত প্রকৌশলীর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রুলকার্ভ অনুযায়ী (পানির পরিমাপ) কাপ্তাই লেকে পানির ধারণক্ষমতা ১০৯ ফুট মিনস সি লেভেল (এমএসএল)। কিন্তু বর্তমানে কাপ্তাই লেকে পানি আছে ৮৫ দশমিক ৫১ ফুট (এমএসএল)। পাঁচটি ইউনিটের মধ্যে বর্তমানে কাপ্তাই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ২ ও ৩ নম্বর ইউনিট সচল রয়েছে। ২ নম্বর ইউনিট থেকে বর্তমানে ৩৫ মেগাওয়াট এবং ৩ নম্বর ইউনিট থেকে ৩৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হচ্ছে। উৎপাদিত বিদ্যুতের পুরোটাই জাতীয় গ্রিডে সঞ্চালন করা হচ্ছে।
প্রকৌশলী আরও বলেন, পানি কম থাকায় বিদ্যুৎকেন্দ্রের সবগুলো ইউনিট একযোগে চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। অন্যদিকে, কাপ্তাই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১ নম্বর ইউনিট বার্ষিক রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য বর্তমানে বন্ধ রাখা হয়েছে। বাকি সব ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম থাকা সত্ত্বেও পানির অভাবে চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।