চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে এবার ৫৭০ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষ হয়েছে। ফলনও হয় কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে। এতে লাভের আশায় বুক বেঁধেছিলেন সাড়ে ৪ হাজার কৃষক। কিন্তু উৎপাদিত টমেটোর ন্যায্য দাম না পাওয়ায় কৃষকেরা ব্যাপক লোকসানে পড়েছেন।
উৎপাদনের খরচ তোলা কিংবা লাভ তো দূরের কথা; খেত থেকে শ্রমিক দিয়ে উত্তোলন ও পরিবহনের খরচও উঠছে না। এমনকি বিক্রি করা মূল্যের চেয়ে উত্তোলনের খরচই বেশি পড়ছে। কৃষকেরা এমন পরিস্থিতিতে খেত থেকে টমেটো উত্তোলন বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে হেক্টরের পর হেক্টর জমিতে নষ্ট হচ্ছে পাকা টমেটো।
গত মঙ্গলবার কৃষকেরা জানিয়েছেন, ঈদুল ফিতরের আগে খেত থেকে প্রতি কেজি টমেটো পাইকারি ১৫-২০ টাকা বিক্রি হয়। কিন্তু ঈদের পর বাজারেদর পড়ে যায়। দুই সপ্তাহ ধরে প্রতি কেজি টমেটো পাইকারি বিক্রি হয় ৪-৫ টাকায়। অথচ খেত থেকে তোলা ও বাজারে পরিবহনের খরচ এর চেয়ে বেশি।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবার উপজেলার পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়নে ৫৭০ হেক্টর জমিতে সাড়ে ৪ হাজার কৃষক টমেটো চাষ করেছেন। উৎপাদন হয় ১৫ হাজার টন। বাজারে দর পড়ে যাওয়ার সঙ্গে কোনো হিমাগার না থাকায় পচনশীল এই সবজি সংরক্ষণ করাও সম্ভব হচ্ছে না। এতে উপজেলার গুলিয়াখালী, পৌরসভার নুনাছড়া, বারৈয়াঢালা, সৈয়দপুর, মুরাদপুর, বাঁশবাড়িয়া কুমিরা, বাড়বকুণ্ডের হাজারো কৃষক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
আইয়ুব আলী নামের এক কৃষক বলেন, ‘লাভের আশায় ১ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ১৫০ শতক জমিতে টমেটো চাষ করেছিলাম। ঈদের পর থেকে দুই সপ্তাহ ধরে টমেটোর দাম পড়ে গেছে। পাইকারি ৪-৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে শ্রমিকের মজুরি ও পরিবহন খরচ উঠছে না।’
সীতাকুণ্ড উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবুল্লাহ বলেন, টমেটোর দ্বিগুণ উৎপাদনের কারণেই দাম একেবারেই কমে গেছে। যদি উপজেলায় হিমাগার থাকত, তাহলে অতিরিক্ত টমেটো সংরক্ষণ করা যেত।