এমভি আবদুল্লাহর পাশেই থাকা দুটি স্পিডবোটে তিনজন করে জলদস্যু। সেই স্পিডবোটের মাঝখানে সমুদ্রের পানিতে দুটি টাকার ব্যাগ ফেলা চলে যায় বিশেষ উড়োযান। একটি স্পিডবোট ভেসে থাকা সেই টাকার ব্যাগ সংগ্রহ করে। এবার উড়োযানটি ঘুরে এসে তৃতীয় টাকার ব্যাগটি ফেলে দুটি স্পিডবোটের একটু দূরে। জিম্মি এমভি আবদুল্লাহ থেকে জলদস্যুরা দেখিয়ে দেন, তৃতীয় সেই টাকার ব্যাগটি। টাকা পেয়ে এবার জলদস্যুদের একজন বলে ওঠেন, ‘ইউ আর ফ্রি।’
এরপর জাহাজটির ক্যাপ্টেন ২৩ নাবিকের নাম ধরে পরিচয় করিয়ে দেন। এরও পর দুবাইয়ের পথে রওনা দেয় ৩১ দিন জিম্মি থাকা জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ।
ইংরেজি তিন শব্দের বাক্য। কিন্তু এই ছোট্ট লাইনে জড়িয়ে ছিলে দীর্ঘ সময়ের আতঙ্ক ও অপেক্ষা। লাইনটি শোনার পর জিম্মি নাবিকেরা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়তে দেখা যায়।
মুক্তির পর এমভি আবদুল্লাহর মালিকপক্ষ থেকে দেওয়া ভিডিওতে এসব দৃশ্য দেখা যায়। প্রায় পাঁচ মিনিটের ওই ভিডিওতে বিশেষ উড়োযানে টাকার ফেলার দৃশ্য দেখা গেছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, টাকা সংগ্রহের কাজে দুটি স্পিডবোট ও এমভি আবদুল্লায় পজিশন নিয়ে থাকা জলদস্যুদের। প্রথমে উড়োযানটি একটি টাকার ব্যাগ সমুদ্রে ফেলে। এরপর সেই টাকার ব্যাগ একটি স্পিডবোট গিয়ে নিয়ে আসে। উড়োজাহাজটি ৪০ সেকেন্ডের মধ্যে আবারও ঘুরে এসে দ্বিতীয় টাকার ব্যাগটি ফেলে। সেটিও একটি স্পিডবোট গিয়ে সংগ্রহ করে। তবে, তৃতীয় টাকার ব্যাগ দুটি স্পিডবোট থেকে একটু দূরে ফেলা হয়। সেটিও সংগ্রহ করে জলদস্যুরা। তারপর এমভি আবদুল্লায় থাকা জলদস্যুদের বলতে শোনা যায়, ‘ইউ ক্যান গো। ইউ আর ফ্রি নাউ।’
জাহাজটির ক্যাপ্টেনকে বলতে শোনা যায়, ‘এই জাহাজের সবকিছু অক্ষত আছে। ইঞ্জিন ভালো আছে। নাবিকেরাও সবাই সুস্থ রয়েছে।’
উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিকসহ ভারত মহাসাগরে সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়ে কেএসআরএম গ্রুপের মালিকানাধীন এমভি আবদুল্লাহ নামের ওই জাহাজ। এরপর থেকে জাহাজটির মালিকপক্ষ ও সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের উদ্ধারে নানা তৎপরতা শুরু হয়। অবশেষে ৩৩ দিন পর উদ্ধার হলো জাহাজটি।