ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় মৌসুমি রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। উপজেলাজুড়ে শিশু, বৃদ্ধসহ সব বয়সী মানুষ জ্বর, সর্দি-কাশি, ডায়রিয়া, পেটব্যথা, শ্বাসকষ্টসহ নানা উপসর্গে আক্রান্ত হচ্ছে। এতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন চিকিৎসাকেন্দ্রে রোগীর চাপ বেড়েছে কয়েক গুণ।
এই সময়ে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ বিদ্যমান থাকায় চিকিৎসা বিভ্রান্তি ও জটিলতা তৈরি হচ্ছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের অনেকের উপসর্গ এক রকম হওয়ায় সঠিক ডায়াগনসিস না হলে রোগ নির্ণয়ে সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগে গিয়ে দেখা গেছে, সকাল থেকেই রোগী ও স্বজনদের উপচে পড়া ভিড়। অধিকাংশ রোগী জ্বর, সর্দি-কাশি, শরীর ব্যথা, গিঁটে ব্যথা, পেটব্যথা ও ডায়রিয়ায় ভুগছে। কেউ কেউ দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠলেও কারও কারও সেরে উঠতে সময় লাগছে বেশি। চিকিৎসকদের মতে, এসব রোগীর ইমিউন সিস্টেম দুর্বল থাকায় সুস্থ হতে দেরি হচ্ছে।
চিকিৎসকেরা বলছেন, এই সময়ে মৌসুমি জ্বরের পাশাপাশি ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার প্রভাব দেখা দিচ্ছে। এ জন্য রোগীদের সঠিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা নেওয়া জরুরি। এতে অল্প সময়ে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা কামাল হোসেন বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে ছেড়ে ছেড়ে জ্বর আসছে। ফার্মেসি থেকে ওষুধ খেয়েও কাজ হয়নি, তাই হাসপাতালে এসেছি।’
এক রোগীর মা শিরিনা বেগম জানান, তাঁর সাড়ে চার বছরের মেয়ে খাদিজা এক সপ্তাহ ধরে জ্বর ও সর্দি-কাশিতে ভুগছে। স্থানীয় পল্লিচিকিৎসকের ওষুধে কাজ না হওয়ায় হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন।
লিপি আক্তার নামের এক রোগী বলেন, ‘দুই দিন ধরে জ্বর, মাথাব্যথা আর ডায়রিয়ায় ভুগছি। আজ খুব দুর্বল লাগছে। ডাক্তার ওষুধ লিখে দিয়ে বলেছেন, নিয়ম মেনে খেলেই সুস্থ হয়ে যাব।’
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ শেখ হাসিবুর রেজা বলেন, ঋতু পরিবর্তনের এই সময়ে মৌসুমি রোগের প্রকোপ স্বাভাবিকভাবে বাড়ে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। জ্বর, কাশি, সর্দি, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও ভাইরাসজনিত ডায়রিয়া এখন বেশি দেখা যাচ্ছে। যাদের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল, তারা দ্রুত আক্রান্ত হচ্ছে।
শেখ হাসিবুর রেজা আরও বলেন, ‘এই সময়ে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার প্রভাবও রয়েছে। তাই অসুস্থ হলে দেরি না করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অথবা রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। আমরা হাসপাতালে আসা রোগীদের পরামর্শ দিচ্ছি এবং বিনা মূল্যে প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করছি।’