কোরবানির মৌসুম সামনে রেখে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার খামারিরা পড়েছেন দুশ্চিন্তায়। উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে হু-হু করে। খাদ্য, খড়, শ্রমিক মজুরি, এমনকি বিদ্যুৎ সমস্যায়ও ক্ষতিগ্রস্ত তাঁরা। তবু বাজারে গরুর ন্যায্য দাম পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে এখন সবচেয়ে বড় শঙ্কা।
উপজেলায় ৮২৫টি তালিকাভুক্ত খামার থাকলেও চলতি বছর স্থানীয়ভাবে ১৮ হাজার ৯৫০টি পশু প্রস্তুত হয়েছে, যা উপজেলার চাহিদা ২১ হাজার ২৩৩টির তুলনায় প্রায় ২ হাজার ২৮৩টি কম। এ ঘাটতি পূরণে আশপাশের এলাকা থেকে পশু আনার পরিকল্পনা রয়েছে উপজেলা প্রশাসনের।
আল বারাকাহ অ্যাগ্রো ফার্মের পরিচালক শরীফ হোসেন মজুমদার বলেন, ‘খাদ্যদ্রব্যের দাম ও বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে খরচ বেড়ে গেছে। কিন্তু হাটে যদি ভালো দাম না পাই, তাহলে লোকসান হবেই।’
পশ্চিম বালিথুবা গ্রামের কামরুন্নাহার ‘নাহার অ্যাগ্রো’র মালিক। তিনি বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে কোরবানির জন্য গরু প্রস্তুত করছি। কিন্তু এবার খরচ এত বেড়েছে যে লাভ তো দূরের কথা, মূলধন টিকিয়ে রাখাই কঠিন হয়ে যাচ্ছে।’
খামারিদের অভিযোগ, সরকারি কোনো সহায়তা বা প্রণোদনা না থাকায় দিন দিন তাঁরা নিরুৎসাহিত হয়ে পড়ছেন। খামারি জসিম উদ্দিন মিন্টু বলেন, ‘খাদ্য ও শ্রমিক মজুরির দাম বাড়ার পাশাপাশি খড়েরও সংকট দেখা দিয়েছে। খামার সম্প্রসারণে সরকারি সহযোগিতা জরুরি।’
অন্যদিকে ক্রেতারাও দামের ঊর্ধ্বগতিতে হতাশ। ক্রেতা শাহাদাত হোসেন হেলাল বলেন, ‘গরুর দাম অনেক বেশি মনে হচ্ছে। কয়েকটি হাট ঘুরে তারপর কিনব।’
এদিকে ৩৬টি কোরবানির হাট বসানোর প্রক্রিয়া চলছে ফরিদগঞ্জে। উপজেলা ও পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, টেন্ডারপ্রক্রিয়া প্রায় সম্পন্ন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুমন ভৌমিক বলেন, ‘চাহিদার তুলনায় ঘাটতি থাকলেও আশপাশ থেকে গরু এলে সমস্যা হবে না। খামারিদের স্বাস্থ্যসেবা ও তত্ত্বাবধান দেওয়া হয়েছে।’
ফরিদগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহ আলম জানান, কোরবানির হাটগুলো ঘিরে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। আর্থিক লেনদেনের নিরাপত্তায় পুলিশ মোতায়েন থাকবে, পাশাপাশি টহল টিমও সক্রিয় থাকবে।