কালের বিবর্তনে বগুড়ার নন্দীগ্রামে হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী শখের মৃৎশিল্প। ঐতিহ্যবাহী এই শিল্পের স্থান দখল করে নিয়েছে প্লাস্টিক, দস্তা ও অ্যালুমিনিয়ামের সামগ্রী। আধুনিক এ সকল বাহারি পণ্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে টিকে থাকা সম্ভব হচ্ছে না মৃৎশিল্প কারিগরদের। তাই দইয়ের ভাঁড় এখন উপজেলার কুমোর সম্প্রদায়ের একমাত্র ভরসা।
আগে অনেক কদর ছিল এই মৃৎশিল্পের। কুমোররা হাতের নৈপুণ্য ও কারিগরি জ্ঞান দিয়ে তৈরি করত বিভিন্ন ধরনের শখের মৃৎশিল্প। এ ছাড়া তাঁরা তৈরি করত পূজা পার্বণের জন্য নানা রঙের বাহারি মাটির জিনিস। আর এ সব সামগ্রী তৈরি করতে কারিগরদের দরকার হয় বিশেষ ধরনের কাঠের তৈরি চাকা, মাটি ও কিছু ছোটখাটো যন্ত্রপাতি।
এই উপজেলার কুমোর সম্প্রদায়রা যুগ যুগ ধরে তৈরি করে আসছে মাটির কলস, হাঁড়ি, সরা, থালা-বাসন, পেয়ালা, সরাই, দইয়ের ভাঁড়, মটক ও পিঠা তৈরির ছাঁচসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। এখন পূর্ব পুরুষদের এ পেশাটিকে ধরে রাখতে প্রতিনিয়ত হিমশিম খেতে হচ্ছে কারিগরদের। তবে মাটির তৈরি জিনিসপত্রের তেমন কদর না থাকলেও দইয়ের ভাঁড়ের চাহিদা রয়েছে ব্যাপক।
উপজেলার আমড়া গোহাইল গ্রামের নির্মলা রানী পাল বলেন, মাটি থেকে তৈরি সব ধরনের জিনিসপত্রের চাহিদা কমে গেছে। আমরা এখনো কিছু কিছু জিনিসপত্র তৈরি করি। তবে প্লাস্টিক কোম্পানিগুলো সব ধরনের জিনিসপত্র তৈরি করলেও দইয়ের সরা ও ভাঁড়ের কোনো বিকল্প তৈরি করতে পারেনি। এ জন্য এখনো আমরা টিকে আছি। আর পূর্ব পুরুষদের এ পেশা ছাড়তেও পারি না। মাটির তৈরি এ জিনিসগুলো হাট-বাজারে বিক্রি করতে হয়। আর দইয়ের ভাঁড় ঘোষেরা বাড়ি থেকে কিনে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিফা নুসরাত বলেন, মৃৎশিল্পীদের জন্য ঋণের ব্যবস্থা থাকলে তাঁদের সে ব্যবস্থা করে দিব।