বন্ধুরা ফিরে গেছেন হলে, আর আসিফ আহমেদ ফিরছেন কফিনে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রথম বর্ষের এই শিক্ষার্থীর মরদেহ আজ বুধবার সকালে কক্সবাজারে সমুদ্রসৈকতে ভেসে ওঠে। এখন সেই মরদেহ নিয়ে সড়কপথে বগুড়ায় আসছেন বাবা রফিকুল ইসলাম।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে হিমছড়ি সৈকতে গোসল করতে নেমে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী ভেসে যান।
আসিফ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী। বাড়ি বগুড়ার নারুলি দক্ষিণ পাড়া এলাকায়। তাঁর বাবা রফিকুল ইসলাম গাবতলীর বাগবাড়ি ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক। মা উম্মে শরিফা মারা গেছেন দুই বছর আগে। দুই ভাইয়ের ছোট আসিফ, পরিবারের চোখের মণি ছিলেন।
‘মা হারা ছেলে আমার। আমি কী বলব, ভাষা নাই। বাবার কাঁধে সন্তানের লাশ, এর চেয়ে কষ্টদায়ক কিছু নেই।’ এভাবেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেলের মৃত্যুর সংবাদটি জানান রফিকুল ইসলাম।
ছেলেকে নিয়ে বলতে গিয়ে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পরশু দিন ওর সঙ্গে শেষ কথা হয়েছিল। বলেছিল, “বাবা কাল আমার পরীক্ষা, পরীক্ষা শেষ হলে কথা বলব।” আমি ঘুণাক্ষরেও বুঝিনি, ও কক্সবাজারে যাবে। এখন আর কোনো কথা বলবে না সে। কফিনেই ফিরছে আমার ছেলে।’
আসিফের খালা বলেন, ‘ও সবার প্রিয় ছিল। বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন—সবার সঙ্গে ওর গভীর সম্পর্ক ছিল। জন্মদিনে ২৫ জন বন্ধু এসেছিল। এত বন্ধু কার থাকে? ও ছিল প্রাণখোলা একটা ছেলে।’
নারুলিতে আসিফের বাসার আশপাশে চলছে মাতম। আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশীরা অপেক্ষা করছেন মরদেহের জন্য। কবরস্থানে জায়গা খোঁড়া হয়েছে, জানাজা ও দাফনের প্রস্তুতি চলছে। সবাই বলছে, এমন মৃত্যু যেন কোনো মা-বাবার দেখা না হয়।