বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় মোছা. খুকুমনি (৩২) নামের এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত খুকুমনির বাবার অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দীর্ঘদিনের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তিনি আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন। এ ঘটনায় নিহত খুকুমনির বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার কালিয়াকৈর পাঁচবারিয়া গ্রামে। খুকুমনির স্বামী ছালাহ উদ্দিন ওরফে কিসমত (৩৯) সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার গোতাগাতী গ্রামের মৃত রজব আলীর ছেলে। প্রায় ১০ বছর আগে তাঁদের বিয়ে হয়। দাম্পত্যজীবনে তাঁদের মেহেদী হাসান নামে সাত বছরের এক ছেলে রয়েছে।
শেরপুর থানা-পুলিশ জানায়, গতকাল রাত সাড়ে ৭টার দিকে খুকুমনির মরদেহ গোপনে দাফনের প্রস্তুতি চলছিল। খবর পেয়ে রাত ১০টার দিকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরদিন আজ শুক্রবার সকালে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
শেরপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহিদুল ইসলাম বলেন, নিহত ব্যক্তির শরীরের পিঠ ও পাঁজরে আঘাতের দাগ রয়েছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নির্ধারণে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন গুরুত্বপূর্ণ হবে।
নিহত খুকুমনির বাবা মওলা বকস শেখ অভিযোগ করেন, কয়েক মাস আগে জামাতা ছালাহ উদ্দিন বিদেশে যাওয়ার পর থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন মেয়েকে নির্যাতন করছিলেন। বিষয়টি জামাতাকে জানানো হলেও তিনি দেশে ফেরার পরও নির্যাতন বন্ধ হয়নি। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে খুকুমনি প্রথমে পাশের বাড়িতে আশ্রয় নেন। পরে বাবার বাড়িতে চলে আসেন। অবশেষে সেখানেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
অন্যদিকে নিহত ব্যক্তির স্বামী ছালাহ উদ্দিন বলেন, ‘আমি বিদেশে থাকায় স্ত্রীর ওপর কী ঘটেছে, তা পুরোপুরি জানতাম না। দেশে ফিরে আসার পর শুনেছি, তাকে নানাভাবে নির্যাতন করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মঈনুদ্দিন বলেন, ‘নারীর মৃত্যুর ঘটনায় আমরা তদন্ত শুরু করেছি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে। অভিযোগের বিষয়গুলোও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’