বরিশালের মুলাদীতে চিকিৎসকের অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভাঙচুর করেছেন রোগীর স্বজনেরা। আজ মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, রোগীকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছিল। ভাঙচুরের কারণে হাসপাতালের ৮ লাখ টাকার যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়েছে বলে দাবি করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. সাইদুর রহমান।
জানা গেছে, সদর ইউনিয়নের তেরচর গ্রামের মফসের খন্দকার (৬০) হৃদ্রোগে আক্রান্ত হলে তাঁকে মুলাদী উপজেলা হাসপাতালে নেওয়া হয়। তাঁর মৃত্যুর পর দুই ছেলে ইব্রাহিম খন্দকার, হানিফ খন্দকারসহ স্বজনেরা হাসপাতালে ভাঙচুর করেন। ইব্রাহিম ও হানিফ ওমানপ্রবাসী। চলতি মাসে তাঁরা কিছুদিনের জন্য দেশে এসেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক শাহারাজ হায়াত জানান, আজ সকালে মফসের খন্দকারকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। ওই রোগীর পালস না পেয়ে তাঁকে ইসিজি করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ইসিজি কক্ষে নেওয়া হয়। কিন্তু দেরি হওয়ার অভিযোগ তুলে রোগীর ছেলে ইব্রাহিম খন্দকার, হানিফ খন্দকারসহ তাঁদের লোকজন যন্ত্রপাতি ভাঙচুর শুরু করেন। তাঁরা হাসপাতালের অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর, পালস অক্সিমিটার ও ইসিজি যন্ত্র ভাঙচুর করেন।
এদিকে রোগীর ছেলে ইব্রাহিম জানান, তাঁর বাবাকে নিয়ে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে হাসপাতালে পৌঁছান। তখন জরুরি বিভাগে কোনো চিকিৎসক পাননি। চিকিৎসক ১০ নম্বর কক্ষে আছেন বলে কর্মচারীরা জানান। সে কক্ষটি ভেতর থেকে আটকানো ছিল। অনেকক্ষণ ডাকাডাকির পরও ভেতর থেকে সাড়া মেলেনি। এই অবস্থায় প্রায় ২০ মিনিট তাঁর বাবাকে হাসপাতালের বাইরে বিশ্রামাগারে রাখা হয়। এরপরে একজন চিকিৎসক এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষার নামে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন। তিনি রোগীর অবস্থা জানাননি এবং বরিশাল মেডিকেলে নেওয়ার পরামর্শও দেননি। প্রায় এক ঘণ্টা পর তাঁর বাবাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। তখন ক্ষুদ্ধ হয়ে তাঁর ছোট ভাই হানিফ খন্দকার অক্সিজেনের কিছু সামগ্রী ভাঙচুর করেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. সাইদুর রহমান বলেন, রোগী মারা যাওয়ার পরও তাঁকে হাসপাতালে এনে মিথ্যা অভিযোগে প্রায় ৮ লাখ টাকার যন্ত্রপাতি ভাঙচুর করেছেন রোগীর স্বজনেরা। এ ঘটনায় মুলাদী থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।
মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।