এম আর খান নামেই পরিচিত ছিলেন তিনি। ছিলেন বাংলাদেশের প্রথিতযশা চিকিৎসক ও শিশুবিশেষজ্ঞ। তাঁর পুরো নাম মোহাম্মদ রফি খান। মা-বাবা এবং প্রতিবেশীর কাছে ‘খোকা’ নামে পরিচিত ছিলেন তিনি।
এম আর খানের জন্ম ১৯২৮ সালের ১ আগস্ট সাতক্ষীরার রসুলপুরে। সাতক্ষীরা প্রাণনাথ হাইস্কুল থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক এবং কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে আইএসসি পাস করেন। কলকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে ১৯৫২ সালে এমবিবিএস পাস করার পর সাতক্ষীরায় ফিরে আসেন তিনি।
এরপর ১৯৫৬ সালে উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য তিনি লন্ডনে পাড়ি জমান এবং ব্রিটেনের এডিনবরা স্কুল অব মেডিসিন ও স্কুল অব মেডিসিন লন্ডন থেকে দুটি উচ্চতর ডিগ্রি
লাভ করেন। এ ছাড়া এডিনবরা রয়েল কলেজ অব ফিজিশিয়ান থেকে এমআরসিপি ডিগ্রি লাভ করেন।
তিনি ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার কেন্ট এবং এডিনবরা গ্রুপ হাসপাতালে গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন।
১৯৬২ সালে এম আর খান দেশে ফিরে আসেন। ১৯৬৩ সালে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক পদে যোগ দেন। এর দুই বছর পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজে যোগ দেন। ১৯৭৮ সালের নভেম্বরে ডা. খান ঢাকা শিশু হাসপাতালে পরিচালক পদে যোগদান করেন।
অবসরের পর পেনশনের টাকা দিয়ে গড়ে তোলেন ডা. এম আর খান-আনোয়ারা ট্রাস্ট। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি অসহায় মানুষের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। তাঁর উদ্যোগে গড়ে উঠেছে শিশুস্বাস্থ্য ফাউন্ডেশন এবং শিশুস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল। গড়ে তুলেছেন সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতাল, যশোর শিশু হাসপাতাল, সাতক্ষীরা ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার, রসুলপুর উচ্চবিদ্যালয়, উত্তরা উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা সেন্ট্রাল হাসপাতাল, নিবেদিতা নার্সিং হোমসহ আরও বহু প্রতিষ্ঠান। তিনি পোলিও দূর করতে উদ্যোগী ভূমিকা পালনের পাশাপাশি কাজ করেছেন ধূমপানবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে। তাঁর জীবনী স্থান পেয়েছে কেমব্রিজ থেকে প্রকাশিত ইন্টারন্যাশনাল ‘হু ইজ হু অব ইন্টেলেকচুয়াল’ গ্রন্থে।
বাংলাদেশের মানবতাবাদী এই চিকিৎসক ২০১৬ সালের ৫ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।