২০০২ সালে গোল্ডলিফের বিজ্ঞাপন নিয়ে ‘ভয়েজ অব ডিসকভারি’ নামের একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙরের চেষ্টা করে। এর প্রতিবাদে বন্দরের ১৪ নম্বর জেটির সামনে মানববন্ধন করা হয়। সেই প্রতিবাদের মুখে জাহাজটি শেষ পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করেনি। এ ঘটনার নেতৃত্ব দেন নাসরীন হক। অথচ এই সাহসী নারী ২০০৬ সালের ২৪ এপ্রিল সকাল পৌনে ১০টার দিকে নিজ বাসার সামনে একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের গাড়িতে পিষ্ট হয়ে মারা যান।
১৯৮৮ সালে ব্র্যাকের রিসার্চ অ্যান্ড ইভালুয়েশন ডিভিশনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হন নাসরীন হক। গ্রামের মানুষের পুষ্টির জন্য করণীয়, গৃহস্থদের সবজির বাগান করার বিষয়ে উৎসাহী করে তোলা এবং এসব বিষয়ে সহযোগিতা করেন তিনি। সেই বছর বন্যার সময় বন্যার্তদের জন্য খাবার তৈরি ও বিতরণ, পানি বিশুদ্ধ করার উপকরণসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ বিতরণ করেন। ১৯৯৩ সালের শেষের দিকে নাসরীন হেলেন কেলার ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশে সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইজার হিসেবে যোগ দেন। অ্যাসিডদগ্ধ নারীদের পাশে দাঁড়ান। সেখান থেকে পরবর্তী সময়ে তৈরি হয়েছে ‘অ্যাসিড সারভাইভারস ফাউন্ডেশন’।
১৯৯৪ সালে অস্ট্রেলীয় প্রতিষ্ঠান এশিয়া এনার্জি ফুলবাড়ী কয়লাখনি থেকে কয়লা উত্তোলনের চুক্তি করে। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকাণ্ড এবং কয়লা উত্তোলন পদ্ধতির সমালোচনা করে জনমত গড়ে তোলেন নাসরীন হক। ২০০৩ সাল থেকে তিনি অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পান। মৃত্যু পর্যন্ত সেখানেই কর্মরত ছিলেন। নাসরীন হকের জন্ম ১৯৫৮ সালের ১৭ নভেম্বর, ঢাকায়।
সূত্র: নারীপক্ষ