হোম > নারী

উদ্বাস্তু শিবিরের সংগ্রাম আর সাফল্যের গল্প

ফিচার ডেস্ক

ইউসরা মারদিনি, ইলহান ওমর ও হালিমা আদেন।

মানুষ স্বপ্নবাজ প্রাণী। যুদ্ধ ও সংঘাতময় পৃথিবীতে ভিটে চ্যুত মানুষও স্বপ্ন দেখে। এই স্বার্থ আর সংঘাতময় পৃথিবীতে মানুষ তার জীবনের চেয়েও বড়। নইলে বেঁচে থাকে কীভাবে! বিশ্ব শরণার্থী দিবসে তেমনি কিছু নারীর গল্প রইল, যাঁরা উদ্বাস্তু জীবনেও স্বপ্ন দেখেছেন জীবনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার।

ইউএনএইচসিআর এর তথ্য মতে ২০২৪ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত, সারা বিশ্বে আনুমানিক ১২২.৬ মিলিয়ন মানুষ বলপ্রয়োগের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এই মানুষেরা নির্যাতন, সংঘাত, সহিংসতা, মানবাধিকার লঙ্ঘন বা জনশৃঙ্খলা গুরুতরভাবে বিঘ্নকারী ঘটনার কারণে ঘর ছাড়া হতে বাধ্য হয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের বড় সংকট এই বাস্তুচ্যুতি। সিরিয়ার প্রায় ১৩.৫ মিলিয়ন, আফগানিস্তানে প্রায় ১০ মিলিয়ন, ইউক্রেনে আনুমানিক ৮.৮ মিলিয়ন, মিয়ানমারে প্রায় ১ মিলিয়ন মানুষ বাস্তুচ্যুত। এটা মোটা দাগের হিসাব। এর বাইরে? সে হিসাব কখনোই কোথাও লেখা থাকে না।

দক্ষিণ এশিয়ায় এখন বাংলাদেশ বেশি শরণার্থী শিবির রয়েছে। কক্সবাজারে প্রায় ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছে। এই জেলায় মোট ৩৩টি সরকাররি শরণার্থী শিবির রয়েছে। সেসব শিবিরে খাদ্য, পানি, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষাসহ মৌলিক সেবা পাওয়ার সুযোগ অত্যন্ত সীমিত। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এই শরণার্থীদের সহায়তায় কাজ করে যাচ্ছে, তবে সংকটের সমাধান এখনো অনিশ্চিত। সারা বিশ্বে এই দৃশ্য ব্যতিক্রম নয়। এখানে বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুত হওয়া জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ শিশু এবং বড় অংশ নারী।

এইসব পরিসংখ্যান ও পরিস্থিতিতেও শরনার্থী শিবিরগুলোতে জীবন থেমে নেই। এই অন্ধকার, অনিশ্চয়তা আর দূর্ভোগের মাঝেও সেখান থেকে অনেক নারী উঠে এসেছেন। নিজের জন্য কিছু করতে গিয়ে, কেবল নিজের জীবন নয়, অন্যদের জন্যও আলো হয়ে দাঁড়িয়েছেন। তাঁদের সাহস, সংগ্রাম আর স্বপ্নের গল্প আমাদের শেখায় মানবতার শক্তি, যে কোনো বাধা পেরিয়ে যাওয়ার অদম্য ইচ্ছা।

ইলহান ওমর

শরণার্থী শিবির থেকে মার্কিন কংগ্রেসে

শরণার্থী শিবির থেকে মার্কিন কংগ্রেসে পৌঁছে যাওয়া এক নারী ইলহান ওমর। সোমালিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় থেকে শরণার্থী শিবিরে বড় হওয়া ইলহান ওমর মার্কিন কংগ্রেসের প্রথম সোমালি-আমেরিকান নারী সদস্য। শরণার্থী জীবন ও অভিবাসন নিয়ে তাঁর কঠিন যাত্রা তাঁকে রাজনীতির মঞ্চে নিয়ে এসেছে। তাঁর পরিবার গৃহযুদ্ধ থেকে বাঁচতে সোমালিয়া থেকে পালিয়ে কেনিয়ার গারিসা কাউন্টির দাদাব শরণার্থী শিবিরে চার বছর কাটিয়েছিলেন।

ইউসরা মারদিনি

অলিম্পিকে

শিবিরে থেকে অলিম্পিক! সিনেমার চেয়েও বর্ণিল সে গল্প। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ থেকে বাঁচতে পরিবারের সঙ্গে পালিয়েছিলেন ইউসরা মারদিনি। তাঁর বয়স তখন ১৬, সালটা ২০১৫। প্রথম কয়েক দিন শরণার্থী শিবিরে কাটিয়ে বিমানে চড়ে সিরিয়া ছাড়েন ইউসরা। দুই বোন লেবানন চলে যান। সেখান থেকে পৌঁছান তুরস্কে। সেখান থেকে নৌকায় চড়ে গ্রিসের উদ্দেশে রওনা দেন। পথে ছিল পদে পদে বাঁধে বিপত্তি। অতিরিক্ত যাত্রীর ভারে টলতে থাকা নৌকাটিকে সাঁতার কেটে পারে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব পরে ইউসরা, তাঁর বোন ও অন্যয় দুই যাত্রীর ওপর। সেই সাঁতার কেটে লড়াই করা মেয়েটি তাঁর বোনকে নিয়ে বিশ্বের নজর কাড়ে। পরে জার্মানিতে পৌঁছে অলিম্পিক গেমসে অংশ নিয়েছেন ‘রিফিউজি অলিম্পিক টিম’ হিসেবে। ২০১৬ সালে অলিম্পিকের পতাকা হাতে নিয়ে তিনি জানিয়েছিলেন, তিনি শুধু অলিম্পিকের পতাকা বহন করেননি, বরং তাঁর মতো অনেক উদ্বাস্তুর আশা এবং স্বপ্ন বহন করেছেন।

হালিমা আদেন

সুপার মডেল

উদ্বাস্তু শিবিরের গল্প সত্যিই সিনেমার কাহিনিকেও হার মানায়। সুপারমডেল হালিমা আদেনের গল্পটা তো তেমনি! তিনি র‍্যাম্পে ছড়িয়েছেন আলো।

হালিমার জন্ম ১৯৯৭ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর কেনিয়ার কাকুমা রিফিউজি ক্যাম্পে। মাত্র ৬ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান পরিবারের সঙ্গে এবং মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যে বসবাস শুরু করেন। তিনি বিশ্বের প্রথম হিজাব পরিহিত মডেল হিসেবে আন্তর্জাতিক ফ্যাশন জগতে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।

এই তালিকায় আরও একজন আছেন। তিনি দক্ষিণ সুদানের গৃহযুদ্ধ থেকে পালিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নিয়েছিলেন প্রথম জীবনে। পরে মডেল এবং মানবাধিকার কর্মী হিসেবে পরিচিতি পান। তাঁর নাম মারি মালেক। তিনি এখন নারীর ক্ষমতায়ন এবং শরণার্থীদের অধিকারের জন্য কাজ করে চলেছেন।

শরণার্থী শিবিরের নারীদের এমন অনেক গল্প আছে। এসব গল্প যতই বর্ণিল হোক না কেন, মোট শরনার্থীর কত শতাংশ তাঁরা? তাঁদের এই বর্ণাঢ্য জীবন কি শরনার্থীদের দীর্ঘ সারি ছোট করতে পেরেছে?

দিলরুবা হক মিলি: বনরক্ষী এক নারীর গল্প

অতীতের আলো, বর্তমানের অন্ধকার

জন্মনিবন্ধন করতে বাবার এনআইডি বা তথ্য বাধ্যতামূলক নয়

নারী আন্তর্জাতিক পেশাদার বক্সিংয়ে হিজাব, নিরাপত্তা নাকি প্রথা

পরিবেশ নিয়ে সরব দুই অভিনেত্রী

বিস্মৃত ছবিতে সামনে এল ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে নারীদের নেতৃত্ব

‘সচেতনতার অভাব ও সামাজিক কাঠামোর বৈষম্য নারীদের এগিয়ে যেতে বাধা দিচ্ছে’

‘নারীর সাফল্য অনেক পুরুষকে শঙ্কিত করে, এই শঙ্কাই সহিংসতা বাড়িয়ে দিচ্ছে’

রীমার ‘আয়নাবিবির গহনা’

শ্বশুর-শাশুড়ি বা অন্য কেউ স্বামীর হয়ে তালাক দিতে পারেন না