সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এখন শুধু বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলার জায়গা নয়; ব্যক্তিগত কিংবা পেশাগত অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ, তথ্য আদান-প্রদান, এমনকি সংবেদনশীল আলোচনা পর্যন্ত এসব প্ল্যাটফর্মে হয়। ফলে কোনো ব্যক্তি মারা যাওয়ার পর তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট কী হবে, এই প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
মৃত্যুর পর অ্যাকাউন্ট দীর্ঘদিন সক্রিয় থাকলে তা হ্যাকিং কিংবা তথ্য অপব্যবহারের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। তাই জীবিত অবস্থাতেই কিংবা মৃত্যুর পর পরিবারের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় অথবা মুছে ফেলার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
অ্যাকাউন্ট মেমোরিয়ালাইজড বা নিষ্ক্রিয় করার বিষয়টি কী
সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট স্মরণে রাখা অথবা মুছে ফেলার জন্য কোনো একক বা অভিন্ন পদ্ধতি নেই। বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান তাদের নিজস্ব নীতিমালা অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেয়। উদাহরণ হিসেবে, গুগলসহ কিছু প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট সময় (যেমন দুই বছর) অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় থাকলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা বন্ধ করে দেয়। আবার কোনো ব্যবহারকারীর মৃত্যুর তথ্য স্বজনদের মাধ্যমে জানানো হলে অনেক ক্ষেত্রে দ্রুত অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় কিংবা মুছে ফেলার ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
ফেসবুক
ফেসবুক ব্যবহারকারীরা মেমোরিয়ালাইজেশন সেটিং চালু রাখতে পারে। জীবিত অবস্থাতেই ব্যবহারকারী ঠিক করে যেতে পারেন, মৃত্যুর পর তাঁর প্রোফাইল কে নিয়ন্ত্রণ করবেন।
এ জন্য—
এক্স
এক্সে অ্যাকাউন্ট মেমোরিয়ালাইজড করার সুযোগ নেই। তবে মৃত ব্যক্তির স্বজনেরা চাইলে অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলার অনুরোধ জানাতে পারেন।
এর জন্য প্রয়োজন হয়—
গুগল
গুগল ইতিমধ্যে জানিয়েছে, নির্দিষ্ট সময় ধরে নিষ্ক্রিয় থাকা জি-মেইলসহ গুগল অ্যাকাউন্ট স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে। তবে কোনো ব্যবহারকারীর মৃত্যুর পরপরই অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে চাইলে স্বজনেরা গুগল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় তথ্য ও কাগজপত্র জমা দিতে পারেন।
ইনস্টাগ্রাম
ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্ট মেমোরিয়ালাইজড বা সম্পূর্ণভাবে মুছে ফেলার সুযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ইনস্টাগ্রাম থেকে একটি নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করে জমা দিতে হয়। ফরমে প্রয়োজনীয় তথ্য ও মৃত্যুসনদ সংযুক্ত করলে কর্তৃপক্ষ অনুরোধ অনুযায়ী সেই অ্যাকাউন্ট মেমোরিয়ালাইজড অথবা ডিলিট করে দেয়।
ডিজিটাল নিরাপত্তার যুগে মৃত্যুর পর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের ভবিষ্যৎ নিয়ে আগেভাগেই সিদ্ধান্ত নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। এতে একদিকে যেমন ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত থাকে, তেমনি পরিবার ও স্বজনদের জন্যও অপ্রয়োজনীয় ঝামেলা কমে।
সূত্র: ডেইলি মেইল