হোম > প্রযুক্তি

প্লাস্টিকের বিকল্প আবিষ্কার বাংলাদেশি বিজ্ঞানীর

টি এইচ মাহির 

ড. মাকসুদ রহমান

বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক দূষণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। এই প্লাস্টিক বর্জ্য এখন পরিবেশের জন্য এক মারাত্মক হুমকিতে পরিণত হয়েছে। প্রতিবছর সমুদ্রে প্রায় ১১ মিলিয়ন টন বর্জ্য ফেলা হচ্ছে।

এ কারণে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য পড়ছে ধ্বংসের মুখে।

অনেক দিন ধরে গবেষকরা প্লাস্টিকের বিকল্প খুঁজছেন। তাঁরা এমন কিছু উপাদান খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন, যা জৈবভাবে পচনশীল এবং পরিবেশবান্ধব। আর বিকল্প খুঁজে পেলেন বাংলাদেশের এক গবেষক ও তাঁর দল। তাঁরা আবিষ্কার করেছেন নতুন ধরনের একটি জৈব-পচনযোগ্য উপাদান।

যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল এবং অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মাকসুদ রহমান এবং তাঁর গবেষণা দল এই উপাদান নিয়ে কাজ করছেন। তাঁদের গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে বিখ্যাত নেচার জার্নালে। এই গবেষণাপত্রের প্রথম লেখক হিসেবে কাজ করেছেন রাইস ইউনিভার্সিটির পিএইচডি গবেষক এম এ এস আর সাদী।

তাঁরা এই গবেষণা করছেন ব্যাকটেরিয়া সেলুলোজ নিয়ে। এই সেলুলোজ তৈরি হয় ব্যাকটেরিয়া থেকে, যা সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব। বিজ্ঞানীরা অনেক দিন ধরে এই উপাদান নিয়ে কাজ করছেন। তবে মাকসুদ রহমানের দল গবেষণা করছেন কীভাবে এই উপাদানকে আরও শক্তিশালী ও উন্নত করা যায়। কারণ, এই সেলুলোজের মূল দুর্বলতা এর গঠনগত। তাই গবেষকরা চেষ্টা করছেন একে আরও উন্নত, টেকসই এবং বহুমুখী উপাদানে পরিণত করতে।

রাইস ইউনিভার্সিটি থেকে প্রকাশিত এক ভিডিওতে ড. মাকসুদ রহমান বলেন, ‘আমরা ব্যাকটেরিয়াগুলোর কাজকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে পরিচালিত করছি। ফলে তারা সেলুলোজ এমনভাবে তৈরি করছে, যা কাঠামোগতভাবে সঠিক ও শক্তিশালী। এটি ভবিষ্যতের পরিবেশবান্ধব উপকরণ তৈরিতে বিপ্লব আনবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’

এম এ এস আর সাদী বলেন, ‘আমরা এমন এক উপাদান তৈরি করতে পেরেছি, যা পরিবেশ রক্ষা ও প্লাস্টিকের নির্ভরতা কমাতে বাস্তব সমাধান দিতে পারে।’

এই গবেষণা থেকে তৈরি হয়েছে একধরনের স্বচ্ছ, পাতলা, প্লাস্টিকের মতো পদার্থ; যা পলিথিনের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। ভবিষ্যতে এটি দিয়ে জৈব-পচনযোগ্য পানির বোতল, প্যাকেজিং উপকরণ, বায়োমেডিকেল যন্ত্রপাতি তৈরি করা সম্ভব হবে। এটি শিল্প খাতে প্লাস্টিকের জায়গা দখল করে নিতে পারবে। ফলে পরিবেশে প্লাস্টিক দূষণ অনেকাংশেই কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।

গবেষক ড. মাকসুদ রহমান একজন বাংলাদেশি। তিনি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে ২০০৫ সালে। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব হিউস্টনের মেকানিক্যাল ও অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। এর আগে তিনি রাইস ইউনিভার্সিটিতে রিসার্চ অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেছেন। ড. মাকসুদ রহমান গবেষণার প্রধান ক্ষেত্র হলো

জৈব উপাদান ও পদার্থবিজ্ঞান। তাঁর সাম্প্রতিক গবেষণা হচ্ছে এই জৈব-প্লাস্টিক বা প্লাস্টিকের বিকল্প উপাদান নিয়ে।

গবেষক দলের আরেকজন সদস্য এম এ এস আর সাদীও বুয়েট থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন এবং বর্তমানে রাইস ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি করছেন। তিনি গবেষণাপত্রের প্রধান লেখক। গবেষণার পরিকল্পনা ও সমন্বয় করেছেন মাকসুদ রহমান এবং সাদী পরীক্ষামূলক ফল পরিচালনা, বিশ্লেষণ ও লেখা সম্পন্ন করেছেন।

এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক উফেই কুই, শ্যাম পি. ভক্ত, সাকিব হাসান, বিজয় হরিকৃষ্ণন, ইভান আর. সিকুইরা, মাত্তেও পাসকুয়ালি, ম্যাথিউ বেনেট এবং পুলিকেল এম অজয়ন এই গবেষণায় বিভিন্নভাবে সহায়তা করেছেন।

তথ্যসূত্র: নেচার জার্নাল

গুগলের নতুন ফিচার: সাধারণ হেডফোনই হবে রিয়েল–টাইম অনুবাদক

ডিজিটাল উদ্যোক্তা প্রকল্প: পাঁচ বছরে অর্ধেক কাজ, ব্যয় বাড়ল ১৭৮ কোটি

যুক্তরাষ্ট্রে মাকে হত্যার পর ছেলের আত্মহত্যা, চ্যাটজিপিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ পরিবারের

মিসড কল মেসেজ ও ছবি থেকে অ্যানিমেশনসহ যেসব ফিচার আনল হোয়াটসঅ্যাপ

অস্ট্রেলিয়ায় ২ লাখ অ্যাকাউন্ট বন্ধ: ‘এটা কাজ করছে না ব্রো’— প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ জেন-জি’দের

সকালে ঘুম ভেঙে অস্ট্রেলিয়ার লাখো শিশু দেখবে তাদের ‘আইডি’ উধাও

ভারতে ১৭.৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে মাইক্রোসফট

ব্যবহৃত মোবাইল ফোন আমদানিতে বিটিআরসির ‘না’, কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি মোবাইল ব্যবসায়ীদের

৩০ মিনিটের বেশি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার শিশুদের মনোযোগের ক্ষমতা কমায়, বলছে গবেষণা

ট্রাম্পের নতি স্বীকার, এনভিডিয়ার শক্তিশালী এআই চিপ চীনে বিক্রির অনুমতি