হোম > প্রযুক্তি

২০০০–২০০৯: পৃথিবী বদলে দেওয়া যত প্রযুক্তি

২০০১ সালে উইন্ডোজ এক্সপি উন্মোচিত হয়। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বের প্রযুক্তির ইতিহাসে ২০০০ থেকে ২০০৯ সাল ছিল এক বিশাল পরিবর্তনের যুগ। দৈনন্দিন জীবনকে বদলে দেওয়ার পাশাপাশি সমাজ, সংস্কৃতি এবং অর্থনীতির কাঠামোকেই নতুন করে সাজিয়ে দিয়েছে এই দশকের বেশ কিছু উদ্ভাবন। দুনিয়া কাঁপানো সেই প্রযুক্তিগুলো এক নজরে দেখে নেওয়া যাক—

২০০০: গুগল অ্যাডওয়ার্ডস

অনলাইন বিজ্ঞাপন শিল্পে গুগল অ্যাডওয়ার্ডসের প্রভাব অনেক। অ্যাডওয়ার্ডস অ্যাডভান্সড পারফরমেন্স-ভিত্তিক বিজ্ঞাপন মডেলটি নিয়ে আসে গুগল, যা বিজ্ঞাপনকে আরও কার্যকর এবং সাশ্রয়ী করে তোলে। গুগল অ্যাডওয়ার্ডস-এর মাধ্যমে বিজ্ঞাপনদাতারা তাদের লক্ষ্য গ্রাহকদের কাছে পৌঁছানোর জন্য সার্চ রেজাল্ট, ইউটিউব ভিডিও, অ্যাপ্লিকেশন, গুগল ডিসপ্লে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেখাতে পারেন। এর মাধ্যমে আপনি কীওয়ার্ড বা আগ্রহের ভিত্তিতে বিজ্ঞাপন নির্বাচন করতে পারেন, যাতে আপনার পণ্য বা সেবা সঠিক গ্রাহকের কাছে পৌঁছায়। ২০২৪ সালের শেষের দিকে গুগলের বিজ্ঞাপন রাজস্ব ছিল ২০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।

আইপডের আগমন ছিল এক যুগান্তকারী পরিবর্তন। ছবি: জেডনেট

২০০১: অ্যাপল আইপড ও উইন্ডোজ এক্সপি

২০০১ সালে উইন্ডোজ এক্সপি এবং ওএস এক্স (বর্তমানে ম্যাকওএস) ১০.০ উন্মোচিত হয়েছিল, যা বর্তমান ডেস্কটপ অপারেটিং সিস্টেমগুলোর ভিত্তি তৈরি করেছে।

সেই বছর আইপডের আগমন ছিল এক যুগান্তকারী পরিবর্তন। এতে মিউজিক রাখার বিপুল পরিমাণ জায়গা ছিল। এই প্রযুক্তি স্মার্টফোনের পথপ্রদর্শক ছিল।

২০০২: টর প্রকল্প

নিরাপদ যোগাযোগ নিশ্চিত করতে অনলাইন প্রাইভেসি টুল ‘টর’ তৈরি করা হয়। এই প্রযুক্তি ব্যবহারকারীদের পরিচয় গোপন রেখে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে সাহায্য করত। এমনকি ভিপিএন থেকেও নিরাপদ হতে পারে টর। তবে এটি প্রয়োগের ক্ষেত্রে নানা বিতর্কও সৃষ্টি করেছে।

মূলত যুক্তরাষ্ট্রের নেভির জন্য তৈরি অনিয়ন রাউটার প্রকল্পের অংশ ছিল এটি। অনিয়ন রাউটার ধারণাটি হল, সেখানে নিরাপত্তার অনেক স্তর (একটি পেঁয়াজের স্তরের মতো) থাকে ব্যবহারকারীর পরিচয় জানতে এগুলো একে একে খুলতে হয়।

অ্যান্ড্রয়েডের মাধ্যমে মোবাইল ফোন শিল্পে এক বিপ্লব সৃষ্টি হয়, ছবি: সংগৃহীত

২০০৩: অ্যান্ড্রয়েড

অ্যান্ড্রয়েড বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম। তবে এটি প্রথমে একটি ডিজিটাল ক্যামেরার অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। অ্যান্ড্রয়েডের মাধ্যমে মোবাইল ফোন শিল্পে এক বিপ্লব সৃষ্টি হয়, যা বিশ্বজুড়ে মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়িয়ে তোলে।

২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠার সময় এর নাম ছিল ‘দ্য ফেসবুক’। ছবি: জেডনেট

২০০৪: ফেসবুক প্রতিষ্ঠা

ডিজিটাল সামাজিক যোগাযোগের প্ল্যাটফর্মে ধারণা নিয়ে তৈরি হয় ফেসবুক। এর মাধ্যমে মানুষের যোগাযোগে এবং তথ্য শেয়ারের ধরন বদলে গিয়েছে। তবে এটি নিয়ে অনেক গোপনীয়তা ও তথ্যের অপব্যবহার সম্পর্কিত বিতর্কও চলছে।

২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠার সময় এর নাম ছিল ‘দ্য ফেসবুক’। বর্তমানে এর মূল কোম্পানি মেটা–র ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ ও মেসেঞ্জারের মতো প্ল্যাটফর্ম রয়েছে।

বর্তমানে ইউটিউব বিশ্বের অন্যতম প্রধান ভিডিও প্ল্যাটফর্ম। ছবি: জেডনেট

২০০৫: ইউটিউব

ইউটিউবের মাধ্যমে ভিডিও শেয়ারিং অত্যন্ত সহজ এবং সাশ্রয়ী হয়ে উঠেছিল। এই প্ল্যাটফর্মটি শুধু বিনোদনই নয়, বিপণন এবং তথ্যচিত্র তৈরিতেও বিপ্লব ঘটিয়েছে। বর্তমানে ইউটিউব বিশ্বের অন্যতম প্রধান ভিডিও প্ল্যাটফর্ম।

২০০৬: টুইটার (বর্তমানে এক্স)

টুইটার একটি নতুন ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এই প্ল্যাটফর্মে একেবারে সংক্ষিপ্ত এবং দ্রুত বার্তা আদান-প্রদান করা সম্ভব। এতে বিশ্বজুড়ে সংবাদপ্রবাহ এবং সামাজিক আন্দোলন নতুন গতিতে চলতে থাকে। বিশেষ করে ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তার ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

যখন স্টিভ জবস বিশ্বের সামনে আইফোন উন্মোচন করল, তখন এটি সবার প্রত্যাশাও ছাড়িয়ে যায়। ছবি: জেডনেট

২০০৭: আইফোন

স্মার্টফোন শিল্পে এক বিপ্লব ঘটায় আইফোন। বহু বছর ধরে এই ডিভাইস নিয়ে গুঞ্জন ছিল। তবে যখন স্টিভ জবস বিশ্বের সামনে আইফোন উন্মোচন করল, তখন এটি সবার প্রত্যাশাও ছাড়িয়ে যায়। আইফোনের কারণে অ্যাপ স্টোরের মাধ্যমে স্মার্টফোনের ব্যবহার এবং অ্যাপ ডাউনলোডিং সহজ ও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

এটি ভ্রমণ এবং হোটেল শিল্পে এক বিপ্লব ঘটিয়ে দিয়েছে। ছবি: জেডনেট

২০০৮: এয়ারবিএনবি

এয়ারবিএনবি একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, যা মানুষকে তাদের বাড়ি বা রুম ভাড়া দেওয়ার সুযোগ দেয়। এটি শহরগুলোর অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থায় পরিবর্তন এনেছে। এটি ভ্রমণ এবং হোটেল শিল্পে এক বিপ্লব ঘটিয়ে দিয়েছে। তবে এর কিছু নেতিবাচক প্রভাবও রয়েছে। যেমন: বাড়তি ভাড়া এবং ভাড়া সংকট।

মানুষের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ডেটা সংগ্রহকারী প্রথম পরিধানযোগ্য ডিভাইস হলো ফিটবিট। ছবি: জেডনেট

২০০৯: ফিটবিট ট্র্যাকার

মানুষের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ডেটা সংগ্রহকারী প্রথম পরিধানযোগ্য ডিভাইস হলো ফিটবিট। এটি ‘কোয়ান্টিফাইড সেলফ’ আন্দোলনের শুরু হয়, যা মানুষের স্বাস্থ্য এবং ফিটনেসের প্রতি আগ্রহ ও মনোযোগ বাড়ায়।

এই দশকটি প্রযুক্তি এবং জীবনধারায় মধ্যে একটি বড় পরিবর্তন নিয়ে এসেছিল। প্রতিটি প্রযুক্তি মানুষের জীবনের স্বাচ্ছন্দ্য এবং সুবিধা বৃদ্ধি করেছে। তবে এর কিছু নেতিবাচক প্রভাবও অস্বীকার করা যায় না।

গুগলের নতুন ফিচার: সাধারণ হেডফোনই হবে রিয়েল–টাইম অনুবাদক

ডিজিটাল উদ্যোক্তা প্রকল্প: পাঁচ বছরে অর্ধেক কাজ, ব্যয় বাড়ল ১৭৮ কোটি

যুক্তরাষ্ট্রে মাকে হত্যার পর ছেলের আত্মহত্যা, চ্যাটজিপিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ পরিবারের

মিসড কল মেসেজ ও ছবি থেকে অ্যানিমেশনসহ যেসব ফিচার আনল হোয়াটসঅ্যাপ

অস্ট্রেলিয়ায় ২ লাখ অ্যাকাউন্ট বন্ধ: ‘এটা কাজ করছে না ব্রো’— প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ জেন-জি’দের

সকালে ঘুম ভেঙে অস্ট্রেলিয়ার লাখো শিশু দেখবে তাদের ‘আইডি’ উধাও

ভারতে ১৭.৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে মাইক্রোসফট

ব্যবহৃত মোবাইল ফোন আমদানিতে বিটিআরসির ‘না’, কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি মোবাইল ব্যবসায়ীদের

৩০ মিনিটের বেশি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার শিশুদের মনোযোগের ক্ষমতা কমায়, বলছে গবেষণা

ট্রাম্পের নতি স্বীকার, এনভিডিয়ার শক্তিশালী এআই চিপ চীনে বিক্রির অনুমতি