২০০৫ সালের সেই সফরে মুশফিকুর রহিম গিয়েছিল আমাদের দ্বিতীয় উইকেটরক্ষক ব্যাটার হিসেবে। ইংল্যান্ডে সেবার লম্বা সফর আমাদের। তখন দুই উইকেটরক্ষক ব্যাটার নেওয়া হয়। আমাদের মূল উইকেটরক্ষক ব্যাটার খালেদ মাসুদ পাইলট। দ্বিতীয় উইকেটরক্ষক ব্যাটার হিসেবে মুশফিকুর রহিম গিয়েছিল। সেই সফরে আমরা নিশ্চিত ছিলাম না, তাকে খেলাব কি না।
যেহেতু ছেলেটা টেকনিক্যালি খুব সাউন্ড, স্কিলটাও ভালো, তাকে নিয়ে গিয়ে ধীরে ধীরে আমরা তৈরি করব। আমাদের বলা হয়েছিল, সে ভবিষ্যতের ক্রিকেটার হবে। দলের সঙ্গে তাই নিয়ে গিয়েছিলাম যে সে থাকল আর আমাদের সঙ্গে মানিয়ে নিল। সে অনূর্ধ্ব-১৯ মাত্র শেষ করেছিল। আমরা যখন সেখানে পৌঁছলাম, ইংলিশ কন্ডিশন অনেক কঠিন ব্যাটারদের জন্য। তিন দিনের ম্যাচ, কাউন্টির মূল দলের সঙ্গে কিছু সাইড ম্যাচ খেলেছিলাম। মুশফিকুর রহিমও খেলেছিল। সবাইকে চমকেও দিয়েছিল। ডেভ হোয়াটমোর অনেক খুশি হয়েছিলেন। সবারই ভালো লেগেছিল।
মুশফিককে টেস্ট ম্যাচ খেলানোর আগে একটা চিন্তাভাবনা ছিল। তাকে নামিয়ে দিলে শুরুতেই কাজটা যদি কঠিন হয়, শুরুটা যদি খুব খারাপ হয়, সেই ঝুঁকিটা আমরা নেব কি না। তবে সে খুব ভালো ব্যাটিং করেছে। খালেদ মাসুদ পাইলট তখন আমাদের এক নম্বর উইকেটরক্ষক ব্যাটার। সে তো খেলবেই। সাইড ম্যাচগুলোতে সে (মুশফিক) এত ভালো ব্যাটিং করেছিল, তাই তাকে শুধু ব্যাটার হিসেবে নেওয়া হয়েছিল। ডেভ হোয়াটমোর বলেছিলেন, তার (মুশফিক) যে টেকনিক, তাতে সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি ইংলিশ কন্ডিশনে। এই চিন্তা করেই তাকে একাদশে নেওয়া।
বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে কারও শততম টেস্ট খেলা দেখতে আমাদের ২৫ বছর লাগল। তালিকায় পরের খেলোয়াড় কে হতে পারে—শান্তর অনেক ভালো সম্ভাবনা আছে (শততম টেস্ট খেলার); মেহেদী হাসান মিরাজেরও সুযোগ আছে; লিটনও হতে পারে। আছে এমন বেশ কিছু ক্রিকেটার, যারা ১০০ টেস্ট খেলতে পারে। ১০০ টেস্ট ম্যাচ খেলাটা অবশ্যই কঠিন ব্যাপার। চাইলেও সব সময় তা হয়ে ওঠে না। অনেক আত্মনিবেদন আর পরিশ্রমের দরকার হয়।
২০ বছরে মুশফিকের খেলা ইনিংসগুলোর মধ্যে আমার কাছে তার প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিটা একটু আলাদা। গলে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করেছে সে। প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ১০০ টেস্ট ম্যাচ খেলছে। এটা বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য অনেক বড় ব্যাপার।
অভিনন্দন মুশি!