ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা সুপারক্লাসিকো ম্যাচ বলে কথা। দুই প্রতিবেশী দেশের মাঠের রুদ্ধশ্বাস লড়াই দেখার অপেক্ষায় মারাকানায় আজ এসেছিলেন হাজার হাজার দর্শক। এই ম্যাচে আর্জেন্টিনা জয়ও পেয়েছে। তবে ম্যাচ ছাপিয়ে মাঠে সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতিই হয়ে উঠেছে মূল বিষয়বস্তু।
বাংলাদেশ সময় আজ ভোর সাড়ে ৬টায় মারাকানায় বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ম্যাচ শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে দুই দলের ফুটবলাররা মাঠে নামার আগেই শুরু হয়ে যায় গন্ডগোল। আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জাতীয় সংগীত গাওয়ার সময় আর্জেন্টিনার সমর্থকেরা দুয়ো দিলে তাঁদের মারতে শুরু করেন ব্রাজিলের সমর্থকেরা। গ্যালারিতে তখন শুরু হয় দাঙ্গা। আর দাঙ্গা থামাতে গিয়ে আর্জেন্টাইন সমর্থকদের ওপর লাঠিপেটা করেছেন পুলিশ। তাতে ৩০ মিনিট দেরিতে শুরু হয় সুপারক্লাসিকো।
আধা ঘণ্টা দেরিতে শুরু হলেও পুরো ম্যাচ জুড়ে শারীরিক শক্তি দেখাতেই যেন ব্যস্ত ছিলেন ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা। ম্যাচে ব্রাজিল ফাউল করেছে ২৬টি ও ১৬টি ফাউল করেছে আর্জেন্টিনা। ৩টি হলুদ কার্ড ও ১টি লাল কার্ড-সব কার্ডই হজম করেছে ব্রাজিল। যেখানে বাজে আচরণের জন্য ৮১ মিনিটে লাল কার্ড দেখেন ব্রাজিলের সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার জোয়েলিংটন। ম্যাচে ৬৩ মিনিটে নিকোলাস ওতামেন্দির একমাত্র গোলে আর্জেন্টিনা জিতেছে ১-০ গোলে। আর্জেন্টিনা জিতলেও মারাকানায় এমন সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ ঝেরেছেন লিওনেল মেসি। ইনস্টাগ্রামে আর্জেন্টিনার বিশ্বজয়ী ফুটবলার লিখেছেন, ‘এই দল ইতিহাস গড়েই চলেছে। মারাকানায় দারুণ এক জয় পেয়েছি। তবে আরও একবার ব্রাজিলে আর্জেন্টাইনরা অত্যাচারিত হয়েছে। এটা সহ্য করা যায় না। এর শেষ হওয়া দরকার।’
আর্জেন্টাইন সমর্থকদের ওপর ব্রাজিলের এমন উগ্র আচরণের ঘটনা এবারই নতুন নয়। ৪ নভেম্বর মারাকানাতেই কোপা লিবার্তোদোরেসের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল ব্রাজিলের ফ্লুমিনেন্স ও আর্জেন্টিনার বোকা জুনিয়রস। সেই ফাইনালের আগে বোকা জুনিয়রসের ভক্ত-সমর্থকেরা রিওর কোপাকাবানা সৈকতে সময় কাটাচ্ছিলেন। তাদের ওপর আচমকা হামলা করেন ফ্লুমিনেন্সের ভক্ত-সমর্থকেরা। ব্রাজিলিয়ান পুলিশরাও ফ্লুমিনেন্সের ভক্ত-সমর্থকদের প্রশ্রয় দিয়েছেন। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ম্যাচের দিন এমন হামলার ঘটনা নিয়ে আজ ম্যাচ শেষে পুরোনো ঘটনার কথাও বলেছেন মেসি। আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড বলেন, ‘অবশ্যই এটা খারাপ হলো। তারা (পুলিশ) কীভাবে লোকেদের মেরেছে আমরা দেখেছি। লিবার্তোদোরেসের ফাইনালেও এমনটি হয়েছিল। খেলোয়াড়দের পরিবার সেখানে (গ্যালারি) ছিল। ম্যাচের চেয়ে বিষয়টি নিয়ে আমরা বেশি চিন্তিত ছিলাম। আমরা ড্রেসিং রুমে গিয়েছিলাম কারণ এটি ছিল সবকিছু শান্ত করার সর্বোত্তম উপায়।’