হাইলাইন ডিফেন্স নিয়ে নিজের অবস্থানে অনড় কোচ পিটার বাটলার। এমন কৌশলে বড় ভয়টা থাকে প্রতিপক্ষের পাল্টা আক্রমণ নিয়ে। ভয়কে আর জয় করতে পারল না বাংলাদেশ। মালয়েশিয়ার বিপক্ষে হেরেছে ১-০ গোলে।
ত্রিদেশীয় সিরিজের এই ম্যাচ দিয়েই আজ এক যুগ পর জাতীয় স্টেডিয়ামে খেলতে নামে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। লক্ষ্য মার্চে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় এশিয়ান কাপের প্রস্তুতিতে নিজেদের পোক্ত করা। কিন্তু ফেরাটা স্মরণীয় করে রাখতে পারল কই। র্যাঙ্কিংয়ে ২২ ধাপ এগিয়ে থাকা মালয়েশিয়া (৯২) বাটলারের কৌশলকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দিল।
সপ্তম মিনিটে শামসুন্নাহার জুনিয়রের ক্রসে মনিকা চাকমা মাথা ছোঁয়াতে পারলেই এগিয়ে যেতে পারত বাংলাদেশ। পরের মিনিটে ঋতুপর্না চাকমার কর্নারে শামসুন্নাহার জুনিয়র হেড করলেও তা দূরের পোস্টের বাইরে চলে যায়।
বাংলাদেশের একের পর এক আক্রমণ সামলে মালয়েশিয়া অপেক্ষায় ছিল পাল্টা আক্রমণের। সেই সুযোগটা সফরকারীদের এল ২৯ মিনিটে। বাংলাদেশের হাইলাইন ডিফেন্সের সুবিধা নিয়ে মালয়েশিয়াকে এগিয়ে দেন নুর আইনসিয়া বিন্তি মুরাদ। মাঝমাঠ থেকে দারুণ এক চিপে তাঁর উদ্দেশে বল বাড়ান নুহাদফিনা মোফ ফিরদাউস। আইনসিয়ার গতি সঙ্গে পেরে ওঠেননি বাংলাদেশের সেন্টারব্যাক কোহাতি কিসকু। তাই তাঁকে ঠেকাতে পোস্ট ছেড়ে সামনে চলে আসেন গোলরক্ষক রুপনা চাকমা। সেটাই বড় ক্ষতি করে দেয় স্বাগতিকদের। রুপনাকে কাটাতে কোনো অসুবিধাই হয়নি আইনসিয়ার। বাঁ পায়ের কোনাকুনি শটে বক্সের বাইরে থেকে ফাঁকা জাল কাঁপান মালয়েশিয়ার এই মিডফিল্ডার।
প্রথমার্ধের বাকিটা সময়ও পাল্টা আক্রমণে নির্ভর করে খেলে মালয়েশিয়া। আর বাংলাদেশ সেভাবে আক্রমণের সুযোগ পায়নি বললে চলে।
বিরতির পর বাংলাদেশের একাদশে ৩ পরিবর্তন আনেন বাটলার। মুনকি আক্তার, শামসুন্নাহার জুনিয়র ও অভিষিক্ত মোসাম্মৎ সুলতানার জায়গায় মাঠে নামান স্বপ্না রানী, মোসাম্মৎ সাগরিকা ও তহুরা খাতুনকে।
৫৬ মিনিটে মনিকা চাকমার দূরপাল্লার শট ঠেকাতে কোনো অসুবিধা হয়নি মালয়েশিয়ার গোলরক্ষক নুরুল আজুরিন বিন্তি মাজলানের। ৬২ মিনিটে আবারও কোহাতিকে পরাস্ত করেন আইনিসিয়া। তবে এবার তাঁর চিপ জায়গায় দাঁড়িয়ে তালুবন্দী করেন রুপনা। ৬৮ মিনিটে দারুণ এক সুযোগ আসে বাংলাদেশের। কিন্তু তা কাজে লাগাতে পারেননি সাগরিকা। বাঁ প্রান্ত দিয়ে তহুরার সঙ্গে ওয়ান-টু করে আক্রমণে ওঠেন ঋতুপর্না। তাঁর বাড়ানো ক্রসে সাগরিকা হেড করলেও লক্ষ্য খুঁজে পাননি।
দুই মিনিট পর কোহাতি ও আফঈদা খন্দকারকে কাটিয়ে বিপদ বাড়াতে যাচ্ছিলেন নুর আদ্রিয়েনা বিন্তি জামজাইহিরি। পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসে দ্রুত তাঁর কাছ থেকে বল কেড়ে নেন রুপনা।
৭৭ মিনিটে ঋতুপর্নার জায়গায় মামনি ও শামসুন্নাহার সিনিয়রের পরিবর্তে মাঠে নামেন জয়নব বিবি রিতা। ৮৫ মিনিটে জটলার মধ্য থেকে বল পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি তহুরা। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে নুর ফাজিরা বিন্তি মুহামাদ সানির শট রুপনা ঠেকিয়ে না দিলে বাড়তে পারতে মালয়েশিয়ার জয়ের ব্যবধান। শেষ দিকে মারিয়া একক নৈপুণ্যে বাংলাদেশকে ড্র এনে দিচ্ছিলেন প্রায়। কিন্তু মালয়েশিয়া গোলরক্ষকের বাধা পেরোতে পারেননি। ২৯ নভেম্বর দ্বিতীয় ম্যাচে আজারবাইজানে মুখোমুখি হবে মালয়েশিয়া। সেই আজারবাইজান বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়াবে ২ ডিসেম্বর।
দ্বিতীয় ম্যাচে ২ ডিসেম্বর ইউরোপের আজারবাইজানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। থাইল্যান্ড সফরে দুই ম্যাচ হারের পর ঘরের মাঠে এই পরাজয় সঠিক পথে কতটুকু এগিয়ে নিচ্ছে বাটলারকে।