চ্যাম্পিয়নস লিগে রিয়াল মাদ্রিদ বনাম পিএসজির ম্যাচটাকে দুই ভাগে করা যায়। প্রথম ভাগে কিলিয়ান এমবাপ্পে যদি নায়ক হয়, দ্বিতীয় ভাগে করিম বেনজেমা হয়েছেন মহানায়ক। বেনজেমার জ্বলে ওঠার রাতে মেসি-নেইমার-এমবাপ্পের পিএসজিকে ৩-১ গোলে (দুই লেগ মিলিয়ে ৩-২) হারিয়ে শেষ আটের টিকিট পেয়েছে রিয়াল।
আগের ম্যাচে নেইমার বেঞ্চ থেকে শুরু করলেও এদিন শুরুর একাদশেই ছিলেন ব্রাজিলিয়ান তারকা। বার্নাব্যুতে খেলার প্রথম মিনিট থেকেই আক্রমণে যাওয়ার চেষ্টা করে রিয়াল। স্বাগতিকদের লক্ষ্য ছিল প্রেসিং করে পিএসজিকে চাপে ফেলা। অবশ্য পাল্টা আক্রমণ শুরু করে পিএসজিও। যে কারণে ম্যাচের শুরু থেকে ছিল উত্তাপ। সে সঙ্গে দেখা মিলছিল নান্দনিকতারও। তবে দ্রুতই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় পিএসজি। ১৩ মিনিটে মিলিতাওয়ের ভুলে পাওয়া দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করেন এমবাপ্পে। তাঁর শট ঠেকিয়ে দেন থিবো কোর্তোয়া। এরপর আরেকটি আক্রমণে নেইমারের শটও আটকান কোর্তোয়া।
বিপরীতে চেষ্টা করে রিয়ালও। কিন্তু তারাও পাচ্ছিল না গোলের দেখা। রিয়াল না পারলেও ঠিকই বল জালে জড়ায় পিএসজি। যদিও সেই গোল বাতিল হয় অফসাইডের কারণে। এরপর দ্রুত একাধিক সুযোগ তৈরি করে রিয়াল। তবে তাতেও আসেনি গোল। ৩৯ মিনিটে অবশ্য আর ভুল হয়নি এমবাপ্পের। নেইমারের পাস থেকে বল পেয়ে দুর্দান্ত ফিনিশংয়ে লক্ষ্যভেদ করেন এমবাপ্পে। প্রথমার্ধের শেষ দিকে রিয়াল ডিফেন্সে চাপ বাড়ালেও ব্যবধান বাড়াতে পারেনি পিএসজি।
বিরতির পর ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করে রিয়াল। তবে তাদের আক্রমণগুলো পরিণতি পাচ্ছিল না। উল্টো দ্বিতীয়বার লক্ষ্যভেদ করে বসেন এমবাপ্পে। যদিও অফসাইডে বাতিল হয় সেই গোল। রিয়াল এ সময় সমতায় ফেরানোর চেষ্টা করলেও, পালটা আক্রমণে এমবাপ্পে বারবার বিপদ তৈরি করছিল। তবে এর মধ্যে পিএসজি গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মার মারাত্মক ভুলে সমতায় ফেরে রিয়াল। ইতালিয়ান এই গোলরক্ষক ঠিকঠাক বল ধরে পাস দিতে না পারায় সেই বল পান ভিনিসিয়াস জুনিয়র। তার পাস থেকে সহজে গোল করেন বেনজেমা।
ম্যাচে সমতা ফেরার পর আক্রমণ পালটা আক্রমণে জমে ওঠে ম্যাচ। দুই দলই এ সময় গোলের সুযোগ তৈরি করে। তবে দুই মিনিটের মধ্যে পরপর দুই গোলে হ্যাটট্রিক করে বার্নাব্যুকে ফের উচ্ছ্বাসে ভাসান বেনজেমা। দুই লেগ মিলিয়ে তখনই প্রথম লিড নেয় রিয়াল। আর এই দুই গোলেই শেষ পর্যন্ত বাজিমাত করে 'লস ব্লাঙ্কোস'রা। এই হারে আবার অধরা থেকে গেল পিএসজির চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের স্বপ্ন।