খেলায় ‘প্রতিশোধ’, ‘বদলা’ বলে হয়তো কিছু নেই; তবে অপ্রত্যাশিত হারের পর প্রতিপক্ষকে পাল্টা জবাব দেওয়ার চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞা তো থাকেই।
মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে প্রথম টেস্ট হারের পর দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল নিউজিল্যান্ডের। নিজেদের ডেরায় অপেক্ষাকৃত তরুণ বাংলাদেশের বিপক্ষে পেরে না ওঠাকে কিউইদের টেস্ট ইতিহাসে ঐতিহাসিক বিপর্যয় হিসেবে দেখা হচ্ছিল। ক্রাইস্টচার্চে শেষ ম্যাচ জিততে না পারলেই সিরিজ খোয়াতে হতো টেস্টের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের। সেই অর্থে নিউজিল্যান্ডের জন্য ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট ছিল বদলার মিশন। বাংলাদেশকে আজ ইনিংস ও ১১৭ রানের বিব্রতকর হার উপহার দিয়ে মিশনটা সফলভাবেই সম্পন্ন করল টম ল্যাথামের দল।
কিন্তু বদলা নেওয়ার দিনটা একটু হলেও কি বেদনাবিধুর হলো না নিউজিল্যান্ডের? ব্ল্যাকক্যাপদের ২৩৪ নম্বর ক্যাপধারী মানুষটিকে যে আর ট্রেন্ট বোল্ট-টিম সাউদিদের সঙ্গে উল্লাস করতে দেখা যাবে না! সেঞ্চুরির পর ব্যাট-হেলমেট উঁচিয়ে আর ‘টাং পোকিং’ (জিহ্বায় কামড়) উদ্যাপন করবেন না তিনি। বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ শুরুর আগে অবসরের ঘোষণা দেওয়া রস টেলরের এটিই যে হয়ে রইল শেষ টেস্ট!
তবে বিদায়ী ম্যাচকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে টেলর নিজেই করলেন বিশেষ কিছু। তাঁকে সুযোগটা করে দিলেন টম ল্যাথাম। জয় থেকে নিউজিল্যান্ড যখন একটিমাত্র উইকেট দূরে, তখনই টেলরের হাতে বল তুলে দিলেন কিউই অধিনায়ক। দেড় দশক ব্যাটিংয়ে নিউজিল্যান্ডকে ভরসা দিয়ে যাওয়া মানুষটি ৯ বছর পর হাত ঘোরাতে এসে মজার ছলেই দিলেন দায়িত্বশীলতার পরিচয়। বাংলাদেশের শেষ ব্যাটার ইবাদত হোসেনকে বানালেন নিজের শিকার। বলটিকে মুঠোবন্দী করে তাঁর শেষ শিকারে সহায়তা করলেন অধিনায়ক ল্যাথামই।
টেস্টে টেলর এর আগে বোলিং করেছেন বাংলাদেশের বিপক্ষেই, ২০১৩ সালে চট্টগ্রামে। সেবার এক ওভার বোলিং করে কোনো উইকেট না পাওয়া টেলর আজ ৩ বল করেই নিউজিল্যান্ডকে এনে দিলেন কাঙ্ক্ষিত জয়।
আজ হয়তো পায়নি। তবে অচিরেই অনুভব করবে টেলরহীন টেস্ট থেকে। একজন রস টেলরকে নিউজিল্যান্ড আবার কবে পাবে, কে জানে!
রস টেলরের টেস্ট ক্যারিয়ার
সময়কাল ২০০৭-২০২২
ম্যাচ ১১২
ইনিংস ১৯৬
রান ৭৬৮৩
গড় ৪৪.১৬
ফিফটি ৩৫
সেঞ্চুরি ১৯
ডাবল সেঞ্চুরি ৩
সেরা ইনিংস ২৯০
উইকেট ৩