যত দোষ, নন্দ ঘোষ—ভারতের প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীরের হয়তো এই প্রবাদ জানা নেই। না জানলেও ভারতের প্রধান কোচের ‘হটসিটে’ বসার উত্তাপটা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন গম্ভীর। কোনো সিরিজে ভারতের ভরাডুবি হলে তাঁর ওপর রীতিমতো সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। গম্ভীরের মতে, ক্রিকেট যাঁরা বোঝেন না, তাঁদের এ ব্যাপারে ‘নাক গলানো’ মোটেও সমীচীন নয়।
গম্ভীর গত বছরের জুলাইয়ে প্রধান কোচ হওয়ার পর সীমিত ওভারের ক্রিকেটে দুর্দান্ত খেলছে ভারত। দুবাইয়ে এ বছরের মার্চে জিতেছে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। সেই দুবাইয়েই সেপ্টেম্বরে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত। কিন্তু তাঁর অধীনে দলটি আশানুরূপ পারফরম্যান্স করতে পারছে না। তাতেই লাল বল ও সাদা বলে ভারতের জন্য আলাদা কোচ নিয়োগ দেওয়ার কথা তুলেছিলেন আইপিএলের দিল্লি ক্যাপিটালসের সহস্বত্বাধিকারী পার্থ জিন্দাল।
নাম উল্লেখ না করলেও গম্ভীর তাঁকে (পার্থ) খোঁচা মেরেছেন। বিশাখাপত্তনমে গতকাল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডে শেষে ভারতীয় কোচ বলেছেন, ‘আইপিএলের এক স্বত্বাধিকারী কোচিং প্যানেল ভাগ করার ব্যাপারে লিখেছেন। খুবই অবাক করার মতো বিষয় এটা। প্রত্যেকের উচিত নিজের সীমার মধ্যে থাকা। কারণ, যদি আমরা কারও সিস্টেমে মাথা না ঘামাই, তাদেরও আমাদের ব্যাপারে মাথা ঘামানো উচিত না। ক্রিকেটের বাইরে থাকা কেউ তো বুঝবেন না একটা দল তৈরি করতে কতটা কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। কতটা আত্মনিবেদন দরকার, সেটা অনেকে বোঝেন না। দলের ব্যাপারে কারও পরামর্শের প্রয়োজন নেই।’
দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে টেস্ট সিরিজে ২-০ ব্যবধানে ধবলধোলাই হয়েছে ভারত। কলকাতায় দক্ষিণ আফ্রিকার দেওয়া সিরিজের প্রথম টেস্টে ১২৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৩০ রানে হারে ভারত। গুয়াহাটিতে দ্বিতীয় টেস্টে ৪০৮ রানে হেরে রানের হিসাবে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হারের লজ্জাজনক রেকর্ডে নাম উঠে যায় ভারতের। ভরাডুবির পর জিন্দাল লিখেছিলেন, ‘ধারেকাছেও তো যেতে পারেনি। ঘরের মাঠে বাজেভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে। আমাদের দল ঘরের মাঠে এত বাজে অবস্থায় কবে ছিল, মনে করতে পারছি না। এটা তখনই হবে, যখন লাল বলের জন্য বিশেষজ্ঞ কাউকে নেওয়া হবে না। টেস্টের জন্য বিশেষজ্ঞ লাল বলের কোচ নিয়োগ দেওয়া দরকার।’
ভারত গম্ভীরের অধীনে ১৯ টেস্ট খেলে জিতেছে কেবল ৭ ম্যাচ। হেরেছে ১০ ম্যাচ। দুই ম্যাচ ড্র হয়েছে। কিন্তু ২০২৩-২৫ চক্রের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল হাতের নাগালে থাকা সত্ত্বেও ভারত তা খেলতে পারেনি। নিউজিল্যান্ডের কাছে ঘরের মাঠে ৩-০ ব্যবধানে ধবলধোলাই, অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৩-১ ব্যবধানে হার, প্রোটিয়াদের কাছে ধবলধোলাই—এই তিন সিরিজে ভরাডুবি হয়েছে গম্ভীরের সময়েই। টেস্টে ধবলধোলাইয়ের পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে ভারত।