মাউন্ট মঙ্গানুই আর ঢাকার মাঝে দূরত্বটা হয়তো হাজার মাইলেরও বেশি। সেই দূরত্বই কি বদলে দিল বাংলাদেশ দলকে? নিজেদের সর্বশেষ টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে আড়াই দিনের ব্যবধানে হেরে নিউজিল্যান্ড গিয়েছিল বাংলাদেশ। সেই একই দলটা কিউইদের বিপক্ষে কেমন দাপুটে তিনটা দিনই না পার করল।
তবে তৃতীয় দিনের পাওয়ার সঙ্গে যোগ হয়েছে কিছু আক্ষেপও। প্রথম ইনিংসে নিউজিল্যান্ডের ৩২৮ রান ছাড়িয়ে ছুটছে বাংলাদেশ। ৬ উইকেটে সংগ্রহ ৪০১ রান। লিডও হয়েছে ৭৩ রান। উপমহাদেশের বাইরে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করে এবারই প্রথম লিড নেওয়ার কৃতিত্ব দেখাল বাংলাদেশ। এসব যদি পাওয়া হয়, মুমিনুল হক আর লিটন দাসের সেঞ্চুরি হাতছাড়া কিছুটা হতাশা বাড়াবে বৈকি।
এই দুজনের সঙ্গে চাইলে মাহমুদুল হাসান জয়ের নামটাও যোগ করা যায়। আগের দিনের ৭০ রানের সঙ্গে আর মাত্র ৮ রান যোগ করে আউট হয়ে যান। দ্বিতীয় দিন ধৈর্যের প্রতিমূর্তি হয়ে থাকা জয়কে আজ শুরু থেকেই বেশ তাড়াহুড়ো করছিলেন। পা চলছিল না ঠিকঠাক। শরীর থেকে দূরের বল জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলার চেষ্টা করে গেছেন। নড়বড়ে ভাবটার খেসারতও দেন দিনের চতুর্থ ওভারে। আউট হওয়ার আগের বলেও নিল ওয়াগনারের বলের লাইনে না গিয়ে শরীর থেকে দূরে রেখে ব্যাট চালিয়েছেন, বল বেশ কিছুক্ষণ বাতাসে ছিল।
কিন্তু পরের বলে আর ভাগ্যকে আর পাশে পেলেন না জয়। শর্ট লেংথের বলে অলস শটে গালিতে ধরা পড়েন হেনরি নিকোলসের হাতে। তাঁকে হারানোর পরই মুশফিক-মুমিনুলের জুটি ২০০ রান পার করায় বাংলাদেশকে। তবে ট্রেন্ট বোল্টের বলে বোল্ড হয়ে মুশফিক (১২) আউট হয়ে গেলে লিডের স্বপ্ন কিছুটা ফিকে হয় বাংলাদেশের।
মুগ্ধতা ছড়ানো লিটনের ৮৬ রানের ইনিংসটায় খুঁত থাকলে আউট হওয়া বলটা। দিনের শেষভাগে বোল্টের অফ স্টাম্পের বাইরে নিরীহ বলটা জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে গিয়ে উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ দিয়ে সেঞ্চুরি হাতছাড়ার হতাশায় পুড়েছেন। লিটনের আগে আক্ষেপ বাড়িয়ে যান মুমিনুল হকও। ২৪৪ বলে তাঁর ৮৮ রানের ইনিংসটার সমাপ্তিও হয়েছে বোল্টের হাতে।
তবে মুমিনুল ফিরে যেতে পারতেন ব্যক্তিগত ৯ রানেই। ওয়াগনারের বলে আউট হওয়ার পর তৃতীয় আম্পায়ারের রিভিউতে নো বল ধরা পড়ায় বেঁচে যান। জীবন পাওয়াটাকে সেঞ্চুরি রূপ দিতে ব্যর্থ হয়েছেন বোল্টের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে। দিনের বাকি অংশটা নিরাপদে কাটিয়ে দিয়েছেন ইয়াসির রাব্বি আর মেহেদি হাসান মিরাজ। মিরাজ অপরাজিত আছেন ২০ রানে, রাব্বি ১১ রানে।