২০২২ সালে জনাথন ট্রট প্রধান কোচ হওয়ার পর থেকেই বদলে যেতে শুরু করে আফগানিস্তান ক্রিকেট। আইসিসি ইভেন্টগুলোতে একের পর এক রূপকথার গল্প লিখতে থাকে আফগানরা। তবে সবচেয়ে সফল এই কোচ আর বেশি দিন কাজ করবেন না আফগান ক্রিকেটের সঙ্গে।
আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (এসিবি) আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ট্রটের বিদায়ের কথা নিশ্চিত করেছে। ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত তিনি আফগানদের প্রধান কোচের দায়িত্বে থাকছেন। আফগানিস্তানের ক্রিকেটের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই ট্রটকে বিদায় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দেশটির ক্রিকেট বোর্ড জানিয়েছে। এসিবি প্রধান নির্বাহী নাসিব খান বলেন, ‘জনাথন ট্রট আমাদের এই যাত্রাপথে অনেক বড় অবদান রেখেছে। আমাদের ক্রিকেটারদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছেন। বড় দলগুলোর বিপক্ষে কীভাবে লড়তে হয়, সেটা তিনি দেখিয়েছেন। ২০২৬ সালের দিকে আমরা তাকাচ্ছি। আফগানিস্তান ক্রিকেটকে নতুন এক পর্যায়ে নিয়ে যেতে আমাদের পরিকল্পনার অংশ এটা (ট্রটের বিদায়)।’ আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চে ভারত-শ্রীলঙ্কায় হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।
এসিবি নিজেদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে ট্রটের একটি ছবি পোস্ট করেছে। সেখানে লেখা, ‘মাইলফলক থেকে স্মৃতি। ধন্যবাদ জনাথন ট্রট। ২০২২ থেকে ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত আছেন তিনি।’ মোহাম্মদ নবি, রশিদ খান, নুর আহমদ জাদরান, আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের মতো তারকা ক্রিকেটারদের সঙ্গে কাজ করে সম্মানিত বোধ করছেন ট্রট। এসিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ট্রট বলেন, ‘আফগানিস্তান জাতীয় দলের সঙ্গে কাজ করা আমার কাছে অনেক কিছু। তাদের প্যাশন, দৃঢ়তা ও বড় কিছু অর্জনের জন্য ক্ষুধা আমি ক্রিকেটারদের মধ্যে দেখেছি। যা অর্জন করেছি, তাতে আমি গর্বিত। আফগান ক্রিকেটের সমর্থক হিসেবে সব সময় থাকব। আফগান ক্রিকেট দল ও ভক্ত-সমর্থকদের শুভকামনা জানাচ্ছি।’
২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ, ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি—ট্রট দায়িত্ব নেওয়ার পর আফগানিস্তান ক্রিকেট দলের বাজে গেছে শুধু ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সেবার সুপার টুয়েলভে কোনো ম্যাচ না জিতেই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছিল আফগানরা। যার মধ্যে দুটি ম্যাচ ভেসে গিয়েছিল বৃষ্টিতে। এরপর ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে চার ম্যাচ জেতে আফগানরা। যার মধ্যে ছিল তিন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়। এই বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়েছিল আফগানরা।
ট্রটের সময়ই আইসিসি ইভেন্টে সবচেয়ে বড় সাফল্য আফগানিস্তান পায় ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। নিউজিল্যান্ডকে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় করে দেওয়া আফগানরা খেলেছিল সেমিফাইনাল। আফগানদের ক্রিকেট ইতিহাসে আইসিসির ইভেন্টে এটাই প্রথম কোনো সেমিফাইনাল। এরপর ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ইংল্যান্ডকে হারায় আফগানরা। গত মাসে বাংলাদেশের কাছে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ধবলধোলাই হয় আফগানরা। সেই আফগানরা পাল্টা ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করে। আর গতকাল তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৯ রানে জিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নেয় আফগানরা।