হোম > খেলা > ক্রিকেট

চমকে দিয়ে বিসিবির সহসভাপতি হওয়া কে এই শাখাওয়াত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিসিবির সহসভাপতি মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

আমিনুল ইসলাম বুলবুলের পাশে যখন তিনি দাঁড়ালেন, সেটাই অনেকের কাছে বিস্ময়। জেলা ক্রীড়া সংস্থা থেকে উঠে আসা ঢাকার বড় হোটেলের চেনা মুখ মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন এখন বিসিবির সহসভাপতি। পরিচয়টা যত ঝকঝকে, পথটা ততই চ্যালেঞ্জিং। ঘণ্টাপ্রতি ২০ টাকা ধরে শুরুর ওই দিনগুলো আজও মুঠোয় ধরা রয়েছে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার ফাঁকে সোনারগাঁও বা ব্যাংকুয়েট হলে কাজ করেছিলেন শাখাওয়াত। কদিন আগে একটি জাতীয় দৈনিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, ঘণ্টাপ্রতি ২০ টাকায় কাঁচা হাতে প্লেট ধুয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। পরে বিসিএসের চেষ্টা, ভাইভায় ছিটকে যাওয়ার আঘাত, আবার ফিরেই হোটেল জগতের এক যুদ্ধে ডিপ্লোমা করে নিজেকে পাকা করে তোলেন। ২০০৭ সালে ওয়েস্টিন ঢাকা উদ্বোধন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাউসকিপিং থেকে শুরু করে ফ্রন্ট ডেস্ক, অপারেশন—প্রায় সব বিভাগে কাজ করে একে একে সেকশনের দায়িত্ব নিয়েছেন। বিভাগীয় প্রধান হওয়ার পরে জেনারেল ম্যানেজার হয়েছেন। এরপর এমবিএ (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), এমফিল করার পর এখন পিএইচডি করছেন। এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় গিয়ে ‘প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট’ হয়ে উঠে কর্মীদের সংগঠিত করা, অপারেশন ঠেকানো, অতিথির অভিজ্ঞতা নেওয়া সবই অনুশীলন করেছেন। এখন তিনি সেটা ক্রিকেটের মাঠে প্রয়োগ করতে চান।

বিসিবির সঙ্গে যুক্ত হওয়াও একদম হঠাৎ নয়। মে মাসে বুলবুল যখন স্বল্পমেয়াদি সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছিলেন, তখন তিন উপদেষ্টা নিয়েছিলেন। শাখাওয়াত ছিলেন তাঁদের একজন। দায়িত্ব পেয়েছিলেন ক্রিকেট পর্যটন বিভাগে। এরপর বরিশাল বিভাগের কাউন্সিলর হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে সবচেয়ে দ্রুতই উঠে এলেন কেন্দ্রীয় মঞ্চে।

ক্রিকেট প্রশাসনে একদম নতুন হলেও খেলার মাঠ শাখাওয়াতের কাছে অপরিচিত নয়। জেলা ভোলা হলেও বরিশাল, পটুয়াখালী, পিরোজপুরের মাঠগুলো তাঁর ভালো চেনা। মাঠ নেই, সময় নেই, স্থানীয় ব্যবস্থাপনাও মজবুত নয়। সমাধান কেমন হতে পারে, তা তিনি জানেন। পরিকল্পনা, পরিচালনার দক্ষতা,স্থানীয় পর্যায়ে নিয়মিত ম্যাচ আয়োজন ও বিনিয়োগ তাঁর এক একটা ধারাবাহিক কর্মপরিকল্পনা। হোটেল ম্যানেজমেন্টে তাঁর অর্জিত দক্ষতা (লজিস্টিক ম্যানেজমেন্ট, ইভেন্ট কোঅর্ডিনেশন, স্পন্সরশিপের সঙ্গে কাজ) এগুলো ক্রিকেট প্রশাসনে কাজে লাগতে পারে। বিশেষ করে টুর্নামেন্ট ট্যালি করার ও পর্যটন-ক্রিকেট যুক্ত করে কার্যক্রম বাড়ানোর ক্ষেত্রে তাঁর জ্ঞান কাজে লাগতে পারে।

সভাপতি বুলবুলের পাশে বসে কাল যখন সংবাদ সম্মেলনে শাখাওয়াত কথা বললেন, তখন মাঠ নিয়ে তাঁর (শাখাওয়াত) কর্মপরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেছেন। কণ্ঠে সেই মাঠের গন্ধই ছিল। তিনি বললেন, ‘বরিশালে গত ১৫ বছরে তেমন খেলা হয়নি। আমাদের স্টেডিয়ামের কাজ এখনো শেষ হয়নি, কোনো অবকাঠামো তৈরি হয়নি। আমরা একটা কর্মপরিকল্পনা করেছি—বরিশাল অঞ্চলের খেলা নিয়মিত করব। মাঠের সুবিধা বাড়াব। পাইপলাইন শক্ত করব। বাংলাদেশ ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে আপনাদের সহযোগিতা চাই।’

শুধু চেয়ারে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া নয়। মাঠ পর্যায়ে কাজ দেখাতে হবে। এখানে তিনি বারবার ‘পাইপলাইন’ শব্দটি ব্যবহার করেন। নতুন খেলোয়াড় জোগাড়, নিয়মিত ম্যাচ, স্থায়ী অবকাঠামো—এগুলোই আরকি। একজন হসপিটালিটি এক্সিকিউটিভ কি গ্রামের মাঠে মাঠের খাল খুঁড়ে, গ্রাউন্ড নির্মাণের কাজ হাতে নেবে? জবাবটা পদ্ধতিগত না। কিন্তু তিনি ‘কীভাবে’ করবেন সেটা জানেন। অপারেশন পরিকল্পনা, বাজেট সাজানো, স্থানীয় অংশীদারত্বকে টানানো এসব বস্তুত হোটেল অপারেশনের মতোই। শুধু কনটেক্সট বদলানো। এবং সেই বদলটাই এখন অপেক্ষায় আছে কীভাবে সেই দক্ষতা মাঠে নামবে, সেটাই দেখার বিষয়।

রাজনৈতিক তকমা ও নির্বাচনী বিতর্ক থাকতেই পারে। কিন্তু মানুষের নজর এখন কার্যকারিতার দিকে। একটি ক্রমবিকাশমান, কাঠামোগত পরিকল্পনা ও তৎপরতার মাঝে একজন শাখাওয়াত তাঁর পরীক্ষায় নামবেন। ঘণ্টাপ্রতি ২০ টাকার দিনগুলো তাঁকে কেবল সেই দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয় না। সেই দিনগুলো তাঁর ধৈর্য, কাজের নীতি আর কাজ করার পদ্ধতি শিখিয়েছে।

আইপিএলের দলের মালিকের ‘নাক গলানো’ পছন্দ করছেন না ভারতের কোচ

সাকিব এই ভালো, এই খারাপ

জাকেরের ‘জোর করে লেগে মারতে যাওয়া’র ব্যাখ্যায় কী বললেন আশরাফুল

বিয়ে ভাঙার পর মুখ খুললেন স্মৃতি মান্ধানা

বাংলাদেশের কাছে পাত্তাই পেল না শ্রীলঙ্কা

জাকিরের সেঞ্চুরিতে শিরোপার সুবাস পাচ্ছে সিলেট

পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিলেন বাংলাদেশের মেয়েরা

‘কে বলেছে কোহলি ১০০ সেঞ্চুরি করতে পারবে না’

গোলাপি বলের টেস্টেও ইংল্যান্ডকে উড়িয়ে দিল অস্ট্রেলিয়া

আমিরাতের লিগে খেলার আগে দোয়া চাইলেন তাসকিন