ছন্দ ফিরে পেতে মুশফিকুর রহিম এ মাসের শেষ দিকে যাচ্ছেন চট্টগ্রামে। ‘এ’ দলের হয়ে হাইপারফরম্যান্স (এইচপি) দলের বিপক্ষে দুটি এক দিনের ম্যাচ খেলার কথা তাঁর। মুশফিকের এই সিদ্ধান্ত ‘এ’ দলের প্রয়োজনীয়তা নতুন করে সামনে এনেছে।
‘এ’ দল সাধারণত জাতীয় দলের গুরুত্বপূর্ণ ‘সেতু’ হিসেবে কাজ করে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ছন্দ হারিয়ে ফেলা (যাঁদের এইচপি দলেও খেলার সুযোগ নেই) কিংবা চোট কাটিয়ে লম্বা সময় পর ফিরেছেন, ঘরোয়া ক্রিকেট বা বিভিন্ন পর্যায়ে ধারাবাহিক ভালো খেলছেন, কিন্তু জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে—এমন ক্রিকেটাররা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সুযোগ পান ‘এ’ দলের মতো সেতু পেরিয়ে। এই প্ল্যাটফর্মে একজন ক্রিকেটার সুযোগ পান সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেটের আমেজে নিজেদের তৈরি করতে। অথচ বিসিবির ‘এ’ দলের কার্যক্রম নেই প্রায় দুই বছর। তারা সর্বশেষ আন্তর্জাতিক সিরিজ খেলেছে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। অবশেষে ‘সেতু’টা সক্রিয় করার উদ্যোগ নিয়েছে বিসিবি। লম্বা বিরতির পর আজ চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এইচপির বিপক্ষে চার দিনের ম্যাচ দিয়ে মাঠে ফিরছে ‘এ’ দল।
‘এ’ দলের ম্যাচ দিয়ে লম্বা বিরতির পর মাঠে ফিরছেন নাজমুল হোসেন শান্তর মতো ক্রিকেটাররাও, যাঁদের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার এক-দুই সংস্করণে সীমাবদ্ধ। প্রায় তিন মাস পর ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়ে গতকাল শান্ত বলছিলেন, ‘আমরা যারা শুধু টেস্ট দলে খেলি, সাদা বলের ক্রিকেট কম খেলি, তাদের আবার সিরিজ খেলার সুযোগ তৈরি হয়েছে। এটা আমাদের জন্য ভালো সুযোগ।’
মহামারিতে গত দুই বছর খেলা না থাকলেও ২০১০ থেকে ২০১৯—এই দশ বছরে ‘এ’ দল মোট ম্যাচ খেলেছে ১২০টি। এই সময়ে বছরে গড়ে ১২টি করে ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছে তারা। এর মধ্যে দেশের মাঠে ৪৫টি, বিদেশে ৭৫টি। বড় দৈর্ঘ্যের ম্যাচ খেলেছে ৩৪টি, সীমিত ওভারের ম্যাচ ৮৬টি। উল্লিখিত সময়ে ‘এ’ দল মোট খেলেছে ২১টি সিরিজ। দেশের মাঠে ৮টি, বিদেশে ১৩টি। পরিত্যক্ত হয়েছে পাঁচটি সিরিজ। এই ১০ বছরে বাংলাদেশ ‘এ’ দল সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে, ২৫টি। ২০১০ থেকে ২০১৪—এই পাঁচ বছরের মধ্যে চারবার ক্যারিবীয়দের মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ।
বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খান জানালেন, আগামী নভেম্বর শ্রীলঙ্কা সফর দিয়ে ‘এ’ দলের আন্তর্জাতিক সিরিজ শুরু হবে। তার আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় আরেকটি সফরের চেষ্টা করছে বিসিবি। এই সফরে টি-টোয়েন্টি দলের বাইরে থাকা জাতীয় পুলের খেলোয়াড়দের রাখার পরিকল্পনা বিসিবির। আজকের পত্রিকাকে আকরাম বলেছেন, ‘এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। আমাদের যারা টি-টোয়েন্টি খেলে না, এমন কিছু ক্রিকেটারকে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাঠানোর চেষ্টা করছি। ওখানে ভিন্ন কন্ডিশনে ১৫-২০ দিনের জন্য একটা অনুশীলন ক্যাম্প আয়োজনের চেষ্টা চলছে। আমাদের বোর্ড সভাপতি অনুমোদন করলে এ মাসের শেষের দিকে আমরা ওদের পাঠিয়ে দিতে পারি।’