ভারতে নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ শেষ হয়েছে গত সপ্তাহে। এই বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট এত সফলভাবে আয়োজন করেছে যে পরবর্তী নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে (২০২৯) দল বাড়ানোর চিন্তা করছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা (আইসিসি)। কিন্তু সেই টুর্নামেন্ট তো বহুদূরে। তার আগে উপমহাদেশে বসতে যাচ্ছে আরেকটি আইসিসি ইভেন্ট। সেটা কীভাবে আয়োজন করা যায়, তা নিয়ে চলছে নানা আলাপ-আলোচনা।
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চে ভারত-শ্রীলঙ্কায় হবে দশম টি-টোয়েন্টি। তিন মাস সময়ও বাকি নেই। এরই মধ্যে ভারত-শ্রীলঙ্কাসহ আট ভেন্যু ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থা চূড়ান্ত করে ফেলেছে গত সপ্তাহে। আহমেদাবাদ, দিল্লি, কলকাতা, চেন্নাই, মুম্বাই—ভারতের এই পাঁচ ভেন্যুতে হচ্ছে বিশ্বকাপ। আর শ্রীলঙ্কার কলম্বো, ক্যান্ডিসহ আরেক ভেন্যুতে মাঠে গড়াবে আইসিসির এই টুর্নামেন্ট। কিন্তু সূচি তো প্রকাশ হয়নি। তার ওপর ভারত-পাকিস্তান কেউ কারও দেশে ক্রিকেট খেলতে রাজি হচ্ছে না। এখন সেমিফাইনালের ভেন্যু ঠিক করা নিয়ে বেকায়দায় পড়েছে আইসিসি। ক্রিকবাজের এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়াম ও কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সকে সেমিফাইনালের জন্য সংক্ষিপ্ত তালিকায় রাখা হয়েছে। কিন্তু যদি পাকিস্তান সেমিফাইনালে ওঠে, সেক্ষেত্রে একটা ম্যাচ হবে কলম্বোতে।
ধরা যাক, পাকিস্তান সেমিফাইনালে উঠতে পারল না। কিন্তু শেষ চারে উঠল শ্রীলঙ্কা। তখনো যেকোনো একটি সেমিফাইনাল হবে কলম্বোতে। সহজ ভাষায় পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কার কেউ যদি সেমিতে ওঠে, তখন শেষ চারের একটি করে ম্যাচ ভারত ও শ্রীলঙ্কায় হবে। যদি কোনো দল না ওঠে, তাহলে দুটি সেমিফাইনালই ভারতে হবে। ক্রিকবাজ আহমেদাবাদ-কলকাতার কথা বললেও ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে সেমিফাইনালের ভেন্যু হিসেবে মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের নাম শোনা যাচ্ছে। যদি পাকিস্তান ফাইনালে না ওঠে, তাহলে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ ৭ মার্চ হবে আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে। আর পাকিস্তান ফাইনালে উঠলে ম্যাচটি তখন কলম্বোর প্রেমাদাসায় হবে।
এ বছরে আইসিসির দুই টুর্নামেন্টেই কার্যকর হয়েছে ভারত-পাকিস্তানের নিরপেক্ষ ভেন্যুর নীতি। ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আয়োজক পাকিস্তান হলেও রোহিত শর্মা-বিরাট কোহলিরা খেলেছেন দুবাইয়ে। এমনকি ভারত-পাকিস্তান ম্যাচটিও হয়েছে দুবাইয়ে। আর কদিন আগে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আয়োজক ভারত হওয়ার পরও তারা পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি খেলেছে কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে। তবে বৃষ্টির বাগড়ায় কলম্বোর প্রেমাদাসায় পাকিস্তানের সাত ম্যাচের মধ্যে তিনটিই বৃষ্টিতে ভেসে গিয়েছে।
২০২৪ সালের মতোই থাকছে ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সংস্করণ। ২০ দল নিয়ে হবে দশম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। পাঁচটি করে দল থাকবে প্রতিটি গ্রুপে। সে ক্ষেত্রে গ্রুপ হবে চারটি। প্রতিটি গ্রুপের সেরা দুই দল উঠবে সুপার এইটে। দুই গ্রুপ থাকবে সুপার এইটে। এখানে প্রতিটি গ্রুপে থাকবে চারটি করে দল। সেখান থেকে প্রতিটি গ্রুপের সেরা দুই দল উঠবে সেমিফাইনালে। এরপর হবে শিরোপা নির্ধারণী ফাইনাল। এবার ভারত নামবে শিরোপা ধরে রাখার লড়াইয়ে।
আয়োজক ভারত-শ্রীলঙ্কার পাশাপাশি আপনাআপনি ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছে ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেরা সাত দল আফগানিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, যুক্তরাষ্ট্র এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ। র্যাঙ্কিংয়ের ভিত্তিতে সুযোগ পেয়েছে নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান ও আয়ারল্যান্ড। বাছাইপর্ব থেকে ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের টিকিট কেটেছে জিম্বাবুয়ে, নেপাল, কানাডা, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, নামিবিয়া, ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।