বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শফিকুল ইসলামের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তবে এই ঘটনাকে ‘সুখবর’ বলছেন তিনি। তাঁর মতে, এমন ঘটনার মধ্য দিয়ে সরকার এবং তার উচ্ছিষ্টভোগীদের আসল চেহারা উন্মোচিত হচ্ছে। এতে করে তাঁদের বিষয়ে জনগণের করণীয় নির্ধারণের কাজ অনেকটাই সহজ হবে।
আজ রোববার বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গুম-খুনের শিকার পরিবারের সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন গয়েশ্বর চন্দ্র। জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
গতকাল শনিবার রাজারবাগে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের এক অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়াকে ইঙ্গিত করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘একটি পার্টির সিনিয়র নেতা বলা শুরু করেছেন, তাঁদের নেত্রী নাকি এক নম্বর মুক্তিযোদ্ধা! এর চেয়ে হাস্যকর...। কী আর বলব।’
এই বক্তব্যের সমালোচনা করে গয়েশ্বর বলেন, ‘একজন ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীর স্বঘোষিত গৃহকর্মীর মতো আচরণ করবে এটাই স্বাভাবিক। ফ্যাসিবাদী সরকারের অধীনে যারা কর্মরত আছেন, তাঁদের কাছে ভালো কিছু আশা না করাই ভালো। তবে এটাও একটা সুখবর। তাঁদের বেশি দিন নাই। শেষ সময়ে হোক, অল্প সময়ের জন্য হোক, তাঁদের আসল চরিত্র বেরিয়ে আসছে। এর মাধ্যমে তাঁদের চেনা সহজ হচ্ছে।’
গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, ‘যত লোক আছেন, বর্তমান সরকারের উচ্ছিষ্টভোগী, সবাই স্বরূপে আবির্ভূত হোক জনগণের সামনে। জনগণ তাঁদের চিনতে পারবে। ভবিষ্যতে তাঁদের সম্পর্কে সতর্ক থাকতে পারবে। তাঁদের বিষয়ে জনগণের করণীয় নির্ধারণ সহজ হবে। অর্থাৎ মানুষ চেনার জন্য বেশি কষ্ট করতে হবে না।’
অনুষ্ঠানে গুম-খুন প্রতিরোধে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য দলের নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়ে গয়েশ্বর বলেন, ‘আমরা গুম-খুনের এই অধ্যায়টা বন্ধ করতে চাই। এই বিষয়টা থাকুক আর আমরা কাজ করি, আমরা এটা চাই না। আর নয়। এ জন্য আমাদের শক্তভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। পলায়নপর মনোবৃত্তি চলবে না।’
ডিএমপি কমিশনারের বক্তব্যকে ‘ন্যক্কারজনক’ আখ্যা দিয়ে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘প্রশাসনের লোকেরা গদগদ হয়ে পদসেবা করছে একটি অবৈধ সরকারের। শেখ হাসিনা যেমন বিরোধী শক্তিকে আক্রমণ করতে সীমা-পরিসীমা মানেন না, তিনি যে অবিচারগুলোকে লালন করেন, প্রশাসনের লোকজনও ঠিক তাঁর মানসিকতার মতই কাজ করছে। এটা আওয়ামী লীগের একজন নেতা বললে সেটা একরকম হতো। কিন্তু দেশের একজন কর্মকর্তা, ঢাকা মহানগরীর পুলিশ কমিশনার, তাঁর মুখ দিয়ে কী করে বের হয়!’