বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব দেওয়া আবেগতাড়িত। সরকার এখানে শুধু প্রজ্ঞাপন জারি করতে পারে। রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না। সরকারের পক্ষে কেবিনেটের অনুমোদনে সেটা ইন অ্যাবসেন্স অব পার্লামেন্ট প্রেসিডেন্ট সে আইনগুলো পাস করে থাকেন।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইউট্যাব) উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
গত সেপ্টেম্বরে জুলাই সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত প্রস্তাব বাস্তবায়ন প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মতভিন্নতার মধ্যে বিশেষজ্ঞদের নতুন পরামর্শ প্রস্তাব সামনে এনেছিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এতে বলা হয়, মৌলিক সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার একটি ‘সংবিধান আদেশ’ জারি করতে পারে। এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে। এরপর ওই আদেশ নিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে গণভোট করা যেতে পারে।
সে সময় বিএনপিসহ কয়েকটি দল সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাবে দ্বিমত জানিয়েছিল। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী এটিকে সমর্থন করে। আর প্রস্তাবটি নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বলেছিল, এ নিয়ে তারা দলের ভেতরে আলোচনা করবে।
আজ আলোচনা সভায় গণভোট নিয়েও কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমদ।
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘গণভোটের প্রস্তাব বিএনপিই দিয়েছে। নির্বাচনের দিন গণভোট আয়োজনের কথা বলা হয়েছে। এই প্রস্তাবে দুটি রাজনৈতিক দল ছাড়া সবাই একমত হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়েই আমরা সিদ্ধান্ত নেব—জুলাই জাতীয় সনদের প্রজ্ঞাপন বা গেজেট নোটিফিকেশন কীভাবে করা যায়। কারণ, যেভাবেই হোক, সেটি শেষ পর্যন্ত জনগণের গণভোটের মাধ্যমেই আইনি রূপ পাবে।’
বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘গতকাল (বুধবার) একটি রাজনৈতিক দল বলেছে, জনমতের চাপে বিএনপি গণভোট মেনে নিয়েছে। রাজনীতিতে মনে মনে সুখ অনুভব করলে অসুবিধা নেই। আমরা সেটাকেও স্বাগত জানাই। কিন্তু আমরা তো শুরু থেকেই বলে আসছি, জুলাই জাতীয় সনদ প্রণীত হয়েছে, স্বাক্ষরিত হবে এবং ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সেটি সম্পন্ন হবে।’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘অর্থনৈতিক উন্নতির পাশাপাশি আমাদের মানসিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন প্রয়োজন। অন্যান্য সংস্কারের পাশাপাশি মানসিক সংস্কার দরকার। অন্যথায় সংস্কারকে বাস্তবে রূপ দেওয়া যাবে না।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, ইউট্যাবের মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. এস এম হাফিজুর রহমান প্রমুখ।
আরও খবর পড়ুন: