নতুন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টির (বিজিপি) আত্মপ্রকাশ করেছে। আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হল মিলনায়তনে আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচকের বক্তব্য দেন অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল। নতুন এ রাজনৈতিক দলের উপদেষ্টা ও তাত্ত্বিক নেতা তিনি। তাঁর দেওয়া ২৮ দফার ওপর ভিত্তি করে এ দল পরিচালিত হবে বলে জানানো হয়।
অধ্যাপক আবুল কাসেম বলেন, ‘রাজনীতির লক্ষ্য এখন ক্ষমতা ও অর্থবিত্তের অধিকারী হওয়া। রাজনৈতিক অঙ্গনে ক্রান্তিকাল চলছে। গণতন্ত্র পরিণত হয়েছে নির্বাচনতন্ত্রে। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে পরিবারতন্ত্র। ভ্রষ্ট রাজনীতির বিপরীতে মেহনতি মানুষের মুক্তি ও উন্নতির জন্য একটি আদর্শবাদী রাজনৈতিক দলের প্রয়োজন।’
আবুল কাসেম বলেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাস নিয়ে আওয়ামী লীগ যেভাবে বর্ণনা করে তাতে ভুল আছে, অন্যায় আছে। বঙ্গবন্ধু অনেক মহান নেতা। কিন্তু তিনি একাই সবটা করেছেন? আর কেউ কিছু করেননি! এটা সম্পূর্ণ অন্যায়, ভুল ও ইতিহাস বিকৃতি। এটা থেকে আমাদের রেহাই পেতে হবে। তাজউদ্দীন আহমদকে বাদ দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে কি বড় করে পাওয়া যায়? বঙ্গবন্ধুর সহযোগীরা বঙ্গবন্ধুকে বঙ্গবন্ধু হিসেবে গড়ে তুলেছেন। বঙ্গবন্ধু ছাড়া কারও নাম নেওয়া যাবে না, এ রকম চিন্তা আওয়ামী লীগ থেকে প্রচারিত হয়। এ চিন্তা ভ্রান্ত। এ চিন্তার মধ্যে ইতিহাস বিকৃতি আছে। আমরা চাই আওয়ামী লীগ এ ধরনের ভুল ও ইতিহাস বিকৃতি থেকে বেরিয়ে আসুক।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ প্রবীণ অধ্যাপক বলেন, ভালো জীবনযাপনের জন্য ভালো রাজনীতির প্রয়োজন। যারা প্রকৃত পক্ষে মেহনতি মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন, গণতান্ত্রিক-অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করতে চান; তাঁদের এ আন্দোলনে (গণমুক্তি পার্টি) এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। এ দলের পরামর্শক হিসেবে থাকবেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আলোচনা শেষে অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বিজিপির ৪১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির নাম ঘোষণা করেন। দলটির আহ্বায়ক এম এ আলীম সরকার।
আলীম সরকার বলেন, ‘আহ্বায়ক কমিটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে সারা দেশে সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু হবে। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য ১০০টি কমিটি থাকার নিয়ম করা হয়েছে। সে কারণে খুব জলদি দলের নিবন্ধন করা যাবে না। এ জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ করাও সম্ভব হবে না। নির্বাচনের চেয়ে একটি শুদ্ধ রাজনীতির ধারা সৃষ্টির আন্দোলন শুরু করার ওপর জোরদার করা হবে।’
দলটির আত্মপ্রকাশের আলোচনা সভায় বিশেষ আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আবদুল বাতেন, চিকিৎসক এনামুল হকসহ দলের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মী।