ঢাকা: একটি শিশুর লাশ পড়ে ছিল বেগমবাজার এলাকায় ডাস্টবিনের পাশে। রাজধানীর চকবাজার থানা পুলিশ তা উদ্ধার করেছে। নবজাতকের বয়স সম্ভবত একদিন। ওর মৃতদেহটি জড়ানো ছিল একটি লাল ওড়না দিয়ে। শিশুটি মৃত অবস্থায় জন্মেছে নাকি জন্মের পর এভাবে ওকে ফেলে রাখা হয়েছে, তা জানা যায়নি। হতে পারে, যারা ওই শিশুটিকে জন্ম দিয়েছেন, তাঁরা হয়তো তাকে জীবিত রাখতে চাননি। কেন? তা নিয়ে কিছু অনুমান করা যেতে পারে, কিন্তু রহস্য ভেদ করা যাবে না।
একই রকম আরেকটি ঘটনা ঘটেছে ভারতের দিল্লিতে। ৭ মে সকালে যমুনা নদীতে একটি বড় গামলায় ছোট্ট কাপড়ের পুঁটলি ভেসে আসতে দেখা যায়। গ্রামবাসীরা সেটা পাড়ে তুলে দেখেন—গামলায় শুয়ে এক নবজাতক। এক-দুই দিনের ছোট্ট শিশুটিকে গামলায় শুইয়ে এভাবে ভাসিয়ে দেওয়ার ঘটনাটি দুঃখজনক। পুলিশ নবজাতককে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যায়। শিশুটি সুস্থ আছে। চিকিৎসকেরা নবজাতককে কয়েক দিন পর্যবেক্ষণে রাখবেন। চিকিৎসকদের সূত্রে জানা গেছে, তিন কেজি ওজনের ওই নবজাতক তৃতীয় লিঙ্গের। সম্ভবত সেকারণেই মা-বাবা তাকে গামলায় করে নদীতে ভাসিয়ে দিয়ে স্বস্তি পেয়েছেন।
একটি মানবশিশুর জন্ম একটি পরিবারকে আনন্দে ভরিয়ে দেয়। তবে সন্তান যেমন অতি প্রত্যাশার অমূল্য সম্পদ, তেমনি ‘অনাহূত' সন্তানের কথাও যে শোনা যায় না তা নয়। যাঁরা নিছক খেয়ালের বশে সন্তানের জন্ম দেন, তাঁরা চান না সে সন্তান ভূমিষ্ঠ হোক কিংবা পিতামাতার পরিচয়ে বড় হয়ে উঠুক। এরা ভ্রূণ হত্যার আশ্রয় নেন, আর কোনো কারণে তাতে সফল না হলে অনাদরে অবহেলায় ফেলে দেন পথের ধারে।
বেগমবাজারে পাওয়া মৃত নবজাতকটি এমন খেয়ালি পিতা-মাতার কি না জানি না। তবে আমরা চাইব, এমন ঘটনা যেন না ঘটে, সে ব্যাপারেসবাই সচেতন হবেন। দিল্লির এই নবজাতকের ভবিষ্যৎ কী হবে, তার দেখভালের দায়িত্ব কেউ নেবে কি না, তাবলা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে তার বেঁচে থাকা হয়তো অসম্ভব হবে না। ভারতে তৃতীয় লিঙ্গের দু-একজন মানুষের উচ্চশিক্ষা লাভ করে গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী হওয়ার খবরও জানাগেছে। তাই এই নবজাতক মানুষের ভালোবাসায় বেঁচে যাবে এবং একটা সুন্দর জীবন পাবে—এই কামনা করি।