সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের কারণে সাংসদেরা স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারেন না বলে দাবি করেছেন বিরোধী দলের সাংসদেরা। আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বিলের ওপর আলোচনাকালে এ দাবি করেন তাঁরা। সাংসদেরা বলেন, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের কারণে তাঁদের দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কারও কিছু বলার ক্ষমতা নেই। স্বাধীনভাবে বলার সুযোগ নেই।
সংসদে ‘চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বিলটি পাসের প্রক্রিয়ার সময় বিলটিতে সংসদীয় কমিটির একটি নতুন ধারা অন্তর্ভুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন জাতীয় পার্টির সাংসদ শামীম হায়দার পাটোয়ারী। সংসদীয় কমিটি কোনো বিলে নতুন ধারা যুক্ত করতে পারে কি না, সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলে স্পিকারের রুলিং চান তিনি। জবাবে নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘সংসদের ক্ষমতা সম্পর্কে বলেন।’
সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোনো সাংসদ দলের সিদ্ধান্তের বাইরে ভোট দিতে পারেন না। এতে বলা আছে, কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরূপে মনোনীত হয়ে কোনো ব্যক্তি সাংসদ নির্বাচিত হলে সংসদে ওই দলের বিপক্ষে ভোটদান করলে তাঁর আসন শূন্য হবে।
সংশোধনী প্রস্তাবের সময় জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের প্রসঙ্গ টানেন। তিনি বলেন, ‘সংসদের কি খুব একটা ক্ষমতা আছে? যিনি সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা তাঁর হাতেই সব ক্ষমতা। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের কারণে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কারও কিছু বলার ক্ষমতা আছে? সদস্য পদ কি থাকবে?’
জাপা মহাসচিব বলেন, ‘যতক্ষণ সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ থাকবে, ততক্ষণ সংসদ সদস্যদের স্বাধীনতা নেই। বাজেটে সংসদ সদস্যদের কোনো অংশগ্রহণ নেই। স্বাধীনভাবে বলার সুযোগ নেই।’
শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ৭০ অনুচ্ছেদ কেন এসেছে, তা নিয়ে তিনি ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন। পাকিস্তান সৃষ্টির পর দেখা গেল সাংসদের কেনাবেচা হতো। এই অভিজ্ঞতা থেকে বাংলাদেশের সংবিধানে ৭০ অনুচ্ছেদ যুক্ত করা হয়।
শামীম হায়দার পাটোয়ারী আরও বলেন, ‘কিন্তু এখনকার বাস্তবতা হলো দলের বিরুদ্ধে ভোট না, দলের বিরুদ্ধে কোনো কথাই বলা যাবে না। এর ফলে সংসদে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হচ্ছে না।’
বিএনপির সাংসদ রুমিন ফারহানা বলেন, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের কারণে সাংসদদের ক্ষমতা কতটুকু আছে, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে।
তবে পরে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।