পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, বাংলাদেশে বৃষ্টি কম হলেও ভারতের পানি ঢুকছে দেশের নদ–নদীতে। এভাবে পানি আসতে থাকলে দেশের উত্তরাঞ্চলের নদ–নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইতে পারে। ফলে আগামী ৪৮ ঘণ্টার (দুই দিন) মধ্যে বন্যা সৃষ্টি হতে পারে।
আজ সোমবার নদ-নদীর পরিস্থিতি ও পূর্বাভাস প্রতিবেদন থেকে এই আভাস দিয়েছে কেন্দ্র। এদিকে বন্যার সব ধরনের আগাম প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়।
পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম আজকের পত্রিকাকে জানান, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা ও ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য সব রকম প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কর্মকর্তারা মাঠে রয়েছেন। করোনার মধ্যেও প্রকৌশলীরা দুর্যোগ মোকাবিলায় বিভিন্ন জেলায় দিনরাত কাজ করছেন। কোথায়ও বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে তা সংস্কারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যে যে এলাকায় বন্যার আশঙ্কা আছে সেখানকার প্রশাসনকে আগে ভাগেই সতর্ক করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা যৌথভাবে কাজ করবেন বলে নির্দেশনা দেওয়া আছে।
একই সঙ্গে বন্যার কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা মাথায় রেখে আগাম প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। স্কুল-কলেজ, হাট-বাজারসহ নদীভাঙন রোধে সব ধরনের চেষ্টা চালানো হবে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য বলছে, ভারতের অরুণাচল, পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম, আসাম ও মেঘালয় প্রদেশে ভারী বৃষ্টি অব্যাহত আছে। আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে। ভারতের উজানের এই পানি এলে বাংলাদেশের নদ–নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। ফলে বন্যার সৃষ্টির আশঙ্কা রয়ে গেছে।
কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ভারতের বিভিন্ন প্রবেশে উজানের পানি বাড়ছে। এমন চলতে থাকলে দ্রুত সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশের কিছু অঞ্চলে বন্যা দেখা দেবে। বন্যার বেশি ঝুঁকিতে আছে উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার নদীগুলোর আশপাশের জেলাগুলো। লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রামসহ উত্তরাঞ্চলের কিছু এলাকা প্লাবিত হতে পারে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর ও ভারত আবহাওয়া অধিদপ্তরের গাণিতিক মডেলের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও কাছাকাছি ভারতের হিমালয় পাদদেশীয় ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস আছে। এর ফলে এ সময়ে দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার নদীর পানি দ্রুত সময়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে। যা আকস্মিক বন্যা সৃষ্টি করতে পারে।
আবহাওয়া অফিস বলছে, সোমবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঢাকায় বৃষ্টি হয়েছে মাত্র ১ মিলিমিটার। দেশে সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে নেত্রকোনায় ৮ মিলিমিটার। এছাড়াও দেশের প্রায় ১০টি জেলায় সোমবার বৃষ্টি হয়নি বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।