বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) অধীনে অনুষ্ঠিত ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার মৌখিকে (ভাইভা) অনৈতিকভাবে ফেল করানোর অভিযোগ তুলেছেন প্রায় দেড় শতাধিক প্রার্থী। এর জন্য এনটিআরসিকে দায়ী করে তাঁরা বলছেন, প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর মৌখিক পরীক্ষায় ফেল করানোর নিয়ম নেই। সুকৌশলে মৌখিক পরীক্ষায় তাঁদের বাদ দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার ফলাফল পুনর্বিবেচনা ও সনদ দেওয়ার দাবি জানিয়ে আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নেন ওই প্রার্থীরা। এর আগে তাঁরা শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে তাঁরা প্রেসক্লাবে যান।
১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় ৮৩ হাজার পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৬০ হাজারকে উত্তীর্ণ দেখিয়ে গত ৪ জুন চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করে এনটিআরসিএ।
মাগুরা থেকে আসা প্রার্থী জুনায়েদ আহমেদ রাজু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘৮৩ হাজার প্রার্থী মৌখিক পরীক্ষা দিয়েছে। এর মধ্যে ৬০ হাজারকে উত্তীর্ণ দেখিয়ে সনদ দিয়েছে এনটিআরসি।
‘বাকি ২৩ হাজার পরীক্ষার্থী মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার পরও উত্তীর্ণ করানো হয়নি। এখানে বৈষম্যের সৃষ্টি হয়েছে। কেউ লিখিত পরীক্ষায় পাস করলে মৌখিক পরীক্ষায় ফেল করানোর নিয়ম নেই। আমাদের তারা কৌশলে বাদ দিয়েছে। ফলাফল পুনর্বিবেচনা ও সনদ দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
যশোরের মেয়ে লিপিয়ারা খাতুন বলেন, ‘আমাদের ই-সনদ দেওয়ার জন্য গত ১৫ জুন থেকে লাগাতার কর্মসূচি করছি। এনটিআরসিএর চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছিল। তিনি জানিয়েছিলেন, হাইকোর্ট ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় মেনে নিলে আমাদের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ দেখিয়ে সনদ দেওয়া হবে। অথচ ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় ১৯ লাখ আবেদনের বিপরীতে বিসিএসের মতো ৮৩ হাজার লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও আমাদের সনদ দেয়নি।’
টাঙ্গাইল থেকে আসা মো. আমির হামজা বলেন, ‘জাল সনদ নিয়ে অনেকে চাকরি করছে। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো তাদের চাকরি বহাল রেখেছে সরকার। বিগত সরকারের আমলে দুর্নীতি করে চাকরি পাওয়া ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসন করা হচ্ছে। শিক্ষা খাতকে ধ্বংস করা হচ্ছে। আমরা লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও ২৩ হাজার প্রার্থীকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এটা আমাদের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে।’
তিনি জানান, একাধিকবার এ বিষয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। আদালতের একটি রায়ে চাকরিপ্রার্থীদের পক্ষে আদেশও দেওয়া হয়।
আদালতের রায়কে সম্মান জানিয়ে এনটিআরসিএ যেন মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বঞ্চিতদের সনদ দেয়, সেই আহ্বান জানান আমির হামজা।