জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় লাখো মানুষের অংশগ্রহণে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের যোদ্ধা এবং ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শহীদ শরিফ ওসমান হাদির জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। জানাজায় ইমামতি করেন ওসমান হাদির বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিক। জানাজার আগে উপস্থিত সবার উদ্দেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘ওসমান হাদি আর ফিরে আসবে না। ওসমান, তুমি দেখে যাও—এই লক্ষ লক্ষ তৌহিদি জনতা তোমার জন্য পাগল। তুমি আজ নেই, আমাদের পাগল বানিয়ে দিয়ে গেছ।’
নিজেদের পরিবারের অবস্থা বর্ণনা করতে গিয়ে হাদির বড় ভাই বলেন, ‘আজকে ওর সন্তানের মুখের দিকে তাকানো যায় না। আমার মা প্রায় পাগল হয়ে যাচ্ছেন, বারবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন। আমার ভাই-বোন সবাই পাগলপ্রায়। আমার ছয় ভাইয়ের মধ্যে সবচেয়ে ছোট ছিল হাদি। আজ ওর লাশ আমার কাঁধে বহন করতে হচ্ছে। ’
‘আপনাদের কাছে আমার বড় কোনো দাবি নেই, শুধু একটিই কথা—আজ সাত থেকে আট দিন হয়ে গেল, দিবালোকে প্রকাশ্যে রাজধানী ঢাকায় জুমার নামাজের পর খুনিরা গুলি করে গেল। খুনিরা যদি পার পেয়ে যায়, এর চেয়ে লজ্জার আর কিছু হতে পারে না। বর্ডার পার হতে যেখানে পাঁচ-সাত ঘণ্টা সময় লাগে, তারা কীভাবে পালিয়ে গেল—এই প্রশ্ন আমি জাতির কাছে রেখে গেলাম।’
আবু বকর সিদ্দিক আরও বলেন, ‘আমার ভাই ওসমান হাদি শহীদি মৃত্যু কামনা করত। হয়তো আল্লাহ তায়ালা ওর সেই চাওয়া কবুল করে নিয়েছেন। কিন্তু আমি আপনাদের বলে রাখি, আমার ভাই উসমান হাদির খুনিদের বিচার যেন প্রকাশ্যে এই বাংলার জমিনে দেখতে পাই। আজ সাত দিন পার হলেও কিছুই করতে পারলাম না—এই দুঃখে কলিজা ফেটে যাচ্ছে।’
হাদি এবং তাঁর স্ত্রী, আট মাস বয়সী সন্তানের জন্য সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ যেন আমার ভাই শহীদ শরিফ ওসমান হাদিকে জান্নাতুল ফেরদাউসের মেহমান হিসেবে কবুল করেন। আল্লাহ তাআলার কাছে আরও দোয়া করছি, আমরা যারা বেঁচে আছি, তারা যেন ইমানের সঙ্গে স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে পারি এবং তৌহিদের এই বাংলাদেশকে রক্ষা করতে পারি।’