দেশের বিভিন্ন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করে যেসব গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, সেসব প্রতিষ্ঠানের মালিকদের শুধু জেলে পাঠালে গ্রাহকদের কোনো লাভ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
আজ বুধবার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সম্মেলন কক্ষে ‘সোর্সিং বাংলাদেশ ২০২১-ভার্চুয়াল সংস্করণ’ শীর্ষক সপ্তাহব্যাপী অনলাইন মেলার আয়োজন সম্পর্কিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রতারণার অভিযোগে বিভিন্ন ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের মালিকেরা জেলে আছেন। এমন পরিস্থিতিতে এসব প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করা ভুক্তভোগী গ্রাহকদের বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘কাউকে জেলখানায় পাঠিয়ে দিলে তো কোনো লাভ নেই। সে জেল খেটেই শেষ, এতে কোনো উপকার হবে না।’
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করে একটা সমাধান বের করব। যুবক, ডেসটিনির যে সম্পদ আছে, আজকে তার ভ্যালুটা কত, সেগুলোর কী হবে—আমরা দেখব। তবে আমরা চেষ্টা করব, যতটুকু ইতিবাচকভাবে সমাধান করা যায়। সেটা আটকে রেখে দিলাম, আর ভোক্তা ক্ষতিগ্রস্ত হলো, সেটা তো যৌক্তিক হবে না।’
যেসব ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সম্পদ রয়েছে, সেগুলোর ভুক্তভোগীদের নিয়ে টিপু মুনশি বলেন, ‘আমাদের কাছে রিপোর্ট আছে ডেসটিনির অনেক জায়গা পড়ে আছে, সম্পদ পড়ে আছে। সেখানে অনেকে অবৈধভাবে স্থাপনা করে টাকা নিয়ে যাচ্ছে; অথচ ভুক্তভোগীরা সমস্যায় (রয়েছেন)। এর জন্য আমরা কথা বলব এবং যেখানে যেখানে বাধা, সমস্যা থাকবে, সমাধানের চেষ্টা করব।’
ই-কমার্সের কারণে অনেক গ্রাহকের অর্থ নষ্ট হয়েছে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখন অনেককে বলতে শোনা যাচ্ছে, যাদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়েছে, তাদের যদি ব্যবসা করতে দিয়ে কঠিনভাবে পর্যালোচনা করা হতো, তাহলে কিছুটা ক্ষতি কাভার করতে পারত। এ ধরনের পরামর্শ আসছে। এ বিষয়গুলো কতটা যৌক্তিক তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।’
মালিকদের জেলখানায় পাঠালে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকের লাভ নেই জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সার্বিক বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করছি। আমরাসহ চার মন্ত্রণালয় (অর্থ, বাণিজ্য, আইন ও স্বরাষ্ট্র) বিষয়টি নিয়ে কথা বলছি। তাদের অবস্থান নির্ণয় করা হচ্ছে। কোনো উন্নতি করা যায় কিনা, সে বিষয়ে দেখা হচ্ছে। ইভ্যালিতে অনেক বড় গ্রুপ অব কোম্পানি বিনিয়োগ করতে চেয়েছিল, কিন্তু নেতিবাচক এসব ঘটনার কারণে তারা সরে দাঁড়িয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলন থেকে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের বিষয়ে গ্রাহকদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান বাণিজ্যমন্ত্রী। অনলাইন মেলা নিয়ে তিনি বলেন, ‘বিদেশি ক্রেতাদের কাছে বাংলাদেশি পণ্য ও সেবা তুলে ধরতে ‘সোর্সিং বাংলাদেশ ২০২১-ভার্চুয়াল সংস্করণ’ নামের অনলাইন এ মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে সাত দিনব্যাপী এ মেলা আগামী ১৮ থেকে ২৪ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে। মেলার সার্বিক ব্যবস্থাপনায় রয়েছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো।’