সাইবার প্রতারণার মামলায় উদ্ধার করা ২ কোটিরও বেশি রূপি ফেরত না দিয়ে নিজেরাই আত্মসাৎ করেছেন দিল্লি পুলিশের দুই সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই)। সেই টাকা নিয়ে পালিয়ে গিয়ে গোয়া, মানালি আর কাশ্মীর ভ্রমণ করেছেন তারা এই কপোত-কপোতী। পরিকল্পনা করেছিলেন নতুন পরিচয়ে জীবন শুরুর, তবে শেষ রক্ষা হয়নি। চার মাসের তদন্ত শেষে মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর থেকে ধরা পড়েন তারা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রধান অভিযুক্ত অঙ্কুর মালিক দিল্লি পুলিশের সাইবার থানায় কর্মরত ছিলেন। তিনি ভুয়া অভিযোগকারীর নামে আদালতের আদেশ জোগাড় করে প্রতারণা মামলায় বাজেয়াপ্ত হওয়া টাকা নিজের পরিচিতজনদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেন। এরপর তিনি সাত দিনের মেডিকেল ছুটি নিয়ে আর কাজে ফেরেননি। একই সময় নিখোঁজ হন তাঁর সহকর্মী ও ২০২১ ব্যাচের আরেক এসআই, নেহা পুনিয়াও। তিনি কর্মরত ছিলেন দিল্লির জিটিবি এনক্লেভ থানায়।
তদন্তে উঠে আসে, প্রশিক্ষণের সময় থেকেই দুজনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তারা পরকীয়ার সম্পর্কে জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। পুলিশের তথ্যমতে, অঙ্কুরের স্ত্রী থাকেন উত্তর প্রদেশের বারাউতে, আর নেহার স্বামী দিল্লির রোহিনিতে।
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর তথ্যমতে, ইন্দোরে গিয়ে কোটি রুপির বেশি স্বর্ণ কেনেন অঙ্কুর-নেহা। তাদের পরিকল্পনা ছিল পাহাড়ি এলাকায় গা ঢাকা দিয়ে পরিচয় গোপন করে একসঙ্গে নতুন জীবন শুরু করবেন তারা। পুলিশ জানিয়েছে, অঙ্কুর জানতেন সাইবার প্রতারণার মামলায় বাজেয়াপ্ত হওয়া অনেক টাকার দাবিদার থাকে না। সেই সুযোগ নিয়ে ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে আদালতের আদেশ দেখিয়ে তিনি টাকা ছাড় করান। পরে নেহাকে নিয়ে পালিয়ে যান।
তবে, পুলিশের প্রযুক্তিগত নজরদারি ও মাঠপর্যায়ের তদন্তে ধরা পড়েন তারা। পুলিশ জানায়, তাদের কাছ থেকে ১২ লাখ নগদ রূপি, এক কোটি রুপির স্বর্ণ, ১১টি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, তিনটি এটিএম কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় মোহাম্মদ ইলিয়াস, আফি ও শাদাব নামের আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হয়েছিল।
এ ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে দিল্লি পুলিশ। এ চক্রে আরও কেউ জড়িত ছিল কিনা তা তদন্ত করা হচ্ছে।