হোম > স্বাস্থ্য > চিকিৎসকের পরামর্শ

আক্রান্ত দাঁতের সমাধান রুট ক্যানেল

ডা. পূজা সাহা

ছবি: সংগৃহীত

প্রাচীনকালে দাঁতের সমস্যার প্রধান সমাধান ছিল অসুস্থ দাঁত উপড়ে ফেলা। ব্যথা কিংবা সংক্রমণ হলে দাঁত তুলে ফেলা ছাড়া দ্বিতীয় কোনো উপায় থাকত না। তবে আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের কল্যাণে এখন দাঁত তুলে ফেলাই শেষ সমাধান নয়; বরং চিন্তা করা হয়, কীভাবে আক্রান্ত দাঁতটি বাঁচিয়ে রাখা যায়। এই ধারায় বর্তমানে দাঁত সংরক্ষণের একটি আধুনিক পদ্ধতি হলো রুট ক্যানেল ট্রিটমেন্ট।

রুট ক্যানেল কী

রুট ক্যানেল হলো দাঁতের এমন একটি চিকিৎসা, যেখানে দাঁত না তুলে আক্রান্ত পাল্প বা দন্তমজ্জা (দাঁতের ভেতরের নরম টিস্যু, যাতে স্নায়ু ও রক্তনালি থাকে) বের করে ফেলা হয়। এরপর দাঁতের ভেতর পরিষ্কার করে জীবাণুমুক্ত করা হয় এবং বিশেষ ওষুধ ও ফিলিং ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করে দাঁতকে আবার কর্মক্ষম করে তোলা হয়। এর ফলে দাঁত দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়।

যেসব লক্ষণে রুট ক্যানেল প্রয়োজন

» দাঁতের গভীর গর্ত থেকে প্রচণ্ড ব্যথা হওয়া এবং ব্যথা কান, মাথা বা চোখ পর্যন্ত ছড়িয়ে যাওয়া

» ঠান্ডা কিংবা মিষ্টিজাতীয় খাবার খেলে দাঁতের গর্তে শিরশির করা বা ব্যথা হওয়া এবং সেই ব্যথা ১৫-২০ সেকেন্ডের বেশি স্থায়ী হওয়া

» মাড়ির কোনো অংশ থেকে পুঁজ বের হওয়া

» কোনো দুর্ঘটনা বা আঘাতে দাঁতের দন্তমজ্জা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া

» এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে দ্রুততম সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। দেরি করলে দাঁত পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

রুট ক্যানেলের প্রক্রিয়া

প্রথমে ইনজেকশনের মাধ্যমে দাঁতের নার্ভকে সাময়িকভাবে অবশ করা হয়, যাতে চিকিৎসাকালে ব্যথা অনুভূত না হয়। এরপর দাঁতের ভেতরে ছোট গর্ত করে আক্রান্ত দন্তমজ্জা বের করে ফেলা হয়। দাঁতের ভেতরের সংক্রমিত অংশ পরিষ্কার করে জীবাণুমুক্ত করা হয়। পরে ওষুধ এবং ড্রেসিং দিয়ে দাঁতকে সিল করে দেওয়া হয়। সবশেষে উপযুক্ত ফিলিং ম্যাটেরিয়াল দিয়ে গর্ত পূরণ করা হয়।

এই চিকিৎসার পর দাঁতের শক্তি কিছুটা কমে যায়। তাই অনেক সময় দাঁতের স্থায়িত্ব বাড়াতে রুট ক্যানেল শেষে দাঁতের ওপর ক্যাপ বা ক্রাউন বসানো হয়। এতে দাঁত আগের মতো পুরোপুরি শক্তিশালী না হলেও প্রায় ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কর্মক্ষম থাকে।

পুরো প্রক্রিয়া দাঁতের অবস্থার ওপর নির্ভর করে। অনেক ক্ষেত্রে কয়েক দিনেই চিকিৎসা শেষ হয়, আবার কখনো জটিল অবস্থায় কয়েক মাস বা এক বছর পর্যন্তও অপেক্ষা করতে হয়।

রুট ক্যানেল করা দাঁতের যত্ন

রুট ক্যানেল করা শেষে দাঁতের যত্ন না নিলে দাঁত আবারও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই—

» রুট ক্যানেল করার দিকে শক্ত খাবার না খাওয়াই ভালো

» নিয়মিত মাড়ির ম্যাসাজ করতে হবে

» প্রতিদিন ব্রাশ করার পাশাপাশি ডেন্টাল ফ্লস ও ইন্টারডেন্টাল ব্রাশ ব্যবহার করে দাঁত পরিষ্কার রাখতে হবে

» বছরে অন্তত একবার ডেন্টাল চেকআপ করানো উচিত

রুট ক্যানেল দাঁত ফেলার বিকল্প একটি কার্যকর সমাধান। সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিলে প্রাকৃতিক দাঁত দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা সম্ভব। তবে দাঁতের ব্যথা কিংবা অস্বস্তিকে অবহেলা না করে দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়াই সবচেয়ে নিরাপদ উপায়।

পরামর্শ দিয়েছেন: ডেন্টাল সার্জন, সিকদার ডেন্টাল কেয়ার, ঢাকা

গলা ও বুক জ্বালাপোড়া সমস্যা: কেন হয় এবং প্রতিরোধে করণীয়

যেসব তথ্যে বিভ্রান্ত হওয়া যাবে না

মনমেজাজ ভালো রাখতে পুষ্টিকর খাবার জরুরি

সকালে নাশতা না খাওয়ার পাঁচ ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি

পিরিয়ডের সময় বেশি রক্তপাত হলে করণীয়

সাইনাসের সংক্রমণে চোখ ব্যথায় করণীয়

তরুণদের ডায়াবেটিস এক অশনিসংকেত

গলাব্যথার সবচেয়ে অবহেলিত কারণ টনসিলোফ্যারিঞ্জাইটিস

বিশ্ব হসপিস এবং প্যালিয়েটিভ কেয়ার দিবসে পিসিএসবি’র বিশেষ আয়োজন

দেশে বাড়ছে অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণ, সতর্ক থাকবেন যেভাবে