রোজা রাখলে দীর্ঘ সময় পানাহার থেকে বিরত থাকতে হয়। চৈত্র মাসের এই গরমে পানিশূন্যতা হতে পারে। সে জন্য চাই সাবধানতা। আর এ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মেনে চলতে হয় কিছু নিয়ম। সাবধান হলে পানিশূন্যতা থেকে হৃৎকম্পনের হার কমে বা রক্তচাপ কমে জটিলতা তৈরি হতে পারে।
রোজা যাঁরা রাখেন, তাঁরা নিজেদের পানিপূর্ণ রাখবেন, বিশেষ করে বয়স্ক ব্যক্তিরা।
এবার মনে হচ্ছে, গরম পড়বে বেশি।তাই ইফতার থেকে শুরু করে সাহ্রির সময় পর্যন্ত মোট আড়াই থেকে তিন লিটার পানি পান করা উচিত। আরেকটি কথা, ইফতার থেকে সাহ্রি পর্যন্ত কেবল পানি নয়, এমন খাবার ও ফল খেতে হবে, যাতে পানি থাকে। অনেকে ইফতারে ভরপেট খেয়ে সাহ্রির আগে আর কিছু খেতে চান না। এটা ঠিক নয়। আমরা সাধারণত এক ঘণ্টা পরপর এক গ্লাস পানি পান করি। সে হিসাব করেই ইফতার থেকে সাহ্রি পর্যন্ত পানি পান করতে হবে ১০ থেকে ১২ গ্লাস। তবে বয়স, উচ্চতা আর স্বাস্থ্যগত অবস্থা বা রোগের প্রেক্ষাপটে পরিমাণ বদল হতে পারে।
- দীর্ঘ সময় পানি পান না করলে।
- যে খাবার খাবেন ইফতার থেকে সাহ্রি পর্যন্ত, তাতে পানিসমৃদ্ধ খাবার না খেয়ে ভাজাপোড়া খাবার বেশি খেলে।
- রোজাদার ব্যক্তির হঠাৎ খুব জ্বর হলে বা ডায়রিয়া হলে।
- ইফতারে বেশি চা-কফি পান করে প্রয়োজনীয় পানি পান না করা।
- দীর্ঘ সময় খররোদে থাকা এবং শারীরিক পরিশ্রম করা।
পানিশূন্যতা বুঝবেন যেভাবে
- মনে হবে জিভ শুকিয়ে গেছে
- চোখ বসে গেছে এবং ঝাপসা দেখা
- দুর্বল বোধ করা
- আর মলত্যাগে কষ্ট, কোষ্ঠ পরিষ্কার না হওয়া
পানিশূন্যতা ঠেকাবেন যেভাবে
- ইফতার ও সাহ্রির মধ্যকার সময়ে যতক্ষণ জেগে থাকবেন, একটু পরপর পানি পান করবেন।
- সহজে হজম হয় তেমন খাবার খাবেন। এর মধ্যে ঝোলজাতীয় খাবার খাওয়া ভালো।
- মসলা আর বেশি তেল-চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা।
- ইফতারে বিভিন্ন ধরনের রসাল ফল খাওয়া। যেমন কমলা, মোসাম্বি, শসা, তরমুজ, বাঙ্গি, পাকা পেঁপে ইত্যাদি। মেথি ভেজানো পানিও ভালো খাবার। বেশি মিষ্টি খাবার তৈরি করতে পারে পানিশূন্যতা।
- বেলের শরবত দারুণ খাবার। সম্ভব হলে ইফতারে অবশ্যই খাবেন।
- রোদে যাবেন না। সরাসরি প্রখর রোদে একেবারে যাবেন না। রোদে বেরোতে হলে ছাতা নেবেন।
- ইফতারে ডাবের পানি পান করুন, প্রয়োজনে ওরস্যালাইন।
- ফ্রিজের ঠান্ডা পানি ভালো নয়। স্বাভাবিক পানি পান করুন।
- লেবু ও মধু কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে পান করুন।
- বাইরের শরবত নয়, ঘরে তৈরি শরবত পান করুন অথবা ঘোল খেতে পারেন।
অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী, সাবেক অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ