হোম > স্বাস্থ্য

অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস থেকে সাবধান

ডা. মো. মাজহারুল হক তানিম

সুস্থ-সবল একজন ব্যাংকে গিয়ে হঠাৎ পড়ে গেলেন। ধরাধরি করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলো। পরীক্ষা করে দেখা গেল, লোকটির ডায়াবেটিস। নতুন ধরা পড়ল, আগে তিনি জানতেন না। ডায়াবেটিস রোগীরা অনেক সময় এভাবেই যান চিকিৎসকদের কাছে।ডায়াবেটিস এমন একটি নীরব ঘাতক, যা রক্তে চিনির পরিমাণ অনেক বেড়ে না গেলে সচরাচর ধরা পড়ে না। অনেক রোগী অপারেশন করাতে এসে বা সরাসরি স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাক করে চিকিৎসকদের কাছে যান ডায়াবেটিস নিয়ে।

অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস থেকে

  • মাথা থেকে পা পর্যন্ত সব অঙ্গের ক্ষতি করতে পারে ডায়াবেটিস। চোখের রক্তনালি ফেটে গিয়ে চোখে রক্তক্ষরণ হতে পারে। অন্ধত্বও বরণ করতে হতে পারে রোগীকে। চোখের রেটিনায় অতিরিক্ত রক্তনালি তৈরি করে দৃষ্টিহীনতার কারণ হতে পারে। এ ছাড়া, ডায়াবেটিস রোগীদের চোখে ছানি পড়ার হার অনেক বেশি।
  • ডায়াবেটিস রোগীদের ব্রেইন স্ট্রোকের প্রবণতা সাধারণ মানুষের থেকে অনেক বেশি। ব্রেইনের রক্তনালি ফেটে গিয়ে বা রক্তনালি বন্ধ হয়ে গিয়ে দুভাবেই স্ট্রোক হতে পারে। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস বহুগুণে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
  • ডায়াবেটিস রোগীদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি সাধারণ মানুষের চেয়ে ৩৭ গুণ বেশি। ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত থাকলে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা আরও বহুগুণ বেড়ে যায়।
  • ডায়াবেটিসের সঙ্গে উচ্চরক্তচাপ এবং রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। ডায়াবেটিসে মৃত্যুর অন্যতম কারণ হার্ট ফেইলওর।
  • দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস থাকলে কিডনি আস্তে আস্তে তার কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। ২০ থেকে ৪০ শতাংশ ডায়াবেটিস রোগীর কিডনি বিকল হয়ে ডায়ালাইসিসের দিকে যায়।
  • অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের কারণে প্রায় ৫০ শতাংশ রোগী ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বা যৌন দুর্বলতায় ভোগেন। ডায়াবেটিস থেকে যৌনাঙ্গে সংবেদনশীলতা হ্রাস পায়।
  • ডায়াবেটিস রোগীদের পায়ের সংবেদনশীলতা সাধারণ মানুষের মতো থাকে না। তাই তারা আঘাত পেলে সহজে বুঝতে পারে না। সেখান থেকে হতে পারে ডায়াবেটিক ফুট। পায়ের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে পা কেটে ফেলতে হতে পারে।
  • ডায়াবেটিস রোগীদের স্নায়ু নষ্ট হতে হতে পা জ্বালাপোড়া বা অস্বাভাবিক সেনসেশন হতে পারে। যেমন পিঁপড়া হাঁটছে বা কিছু দিয়ে গুঁতো দিচ্ছে। ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত থাকলে পেটের সমস্যা হতে পারে। যেমন—কোষ্ঠকাঠিন্য বা পাতলা পায়খানা হতে পারে। 

পরিত্রাণের উপায়

ডায়াবেটিস থেকে যে সমস্যাগুলো হচ্ছে, তা থেকে পরিত্রাণের উপায় হলো ডায়াবেটিস ‘ভালো নিয়ন্ত্রণে’ রাখা।
‘ভালো নিয়ন্ত্রণ’ বলতে আমরা বুঝি, রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা খালি পেটে ৬ থেকে ৮ মিলিমোল এবং ভরা পেটে ৬ থেকে ৯ মিলিমোলের মধ্যে রাখা। এর মধ্যে গত তিন মাসে ডায়াবেটিসের গড় ৭ শতাংশের মধ্যে রাখা। এ ছাড়া উচ্চরক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা। নিয়মিত ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া।
 
লেখক: ডায়াবেটিস ও হরমোন রোগ বিশেষজ্ঞ, ডাক্তার সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

শীতে যেসব খাবার মন শান্ত রাখবে

পুরুষ বন্ধ্যত্ব: কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা

শীতকালীন নানা রোগ থেকে মুক্ত থাকবেন যেভাবে

রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে করণীয়

থাইরয়েড হরমোন কম থাকার লক্ষণ

ওষুধকে ফাঁকি দিতে মরার ভান করে ক্যানসার কোষ—গবেষণায় চমকপ্রদ তথ্য

সাধারণের স্বাস্থ্যসেবা: মিলিয়ে যাচ্ছে ‘সূর্যের হাসি’

ব্লাড ক্যানসার আর মরণব্যাধি নয়, জিন থেরাপিতে অভাবনীয় সাফল্য

অনেক গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিবায়োটিক আর তেমন কাজ করছে না: গবেষণা