সম্প্রতি বেশ কিছু অনলাইন গণমাধ্যমে ‘ডিএনএ টেস্টে ফেঁসে গেলেন পরী’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন দেখা যাচ্ছে, যা ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপ, পেজ ও আইডিতে ব্যাপকভাবে শেয়ার করা হচ্ছে।
নিউজটাইপস২৪ডটকম, আজকেরনিউজগো২৪ডটকম, টিন্টুকোঅনলাইন, নিউজটিপস২৪ডটকম, নিউজভয়েসডটকম, সুপারঅনলাইননিউজডটকম- এরকম বেশ কিছু অনলাইন পোর্টালে একই শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। ফেসবুকে এই খবর শেয়ার করেছেন অনেকেই।
১. পরীমণির ডিএনএ টেস্ট সংক্রান্ত প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে দেখা যায়, প্রতিটি পোর্টালে একই তথ্য হুবহু লেখা হয়েছে।
২. শিরোনামে ডিএনএ টেস্টে ‘ফেঁসে যাওয়া’ কথা লেখা হলেও এ সম্পর্কে প্রতিবেদনগুলোতে আর কিছুই লেখা হয়নি।
৩. প্রতিবেদনে ব্যবহৃত শব্দগুলো অনুসন্ধান করে দেখা যায়, ভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রকাশিত দুটি প্রতিবেদন সম্পাদনা করে প্রতিবেদনটি লেখা হয়েছে। প্রথম অনুচ্ছেদটি গত ১৫ জানুয়ারি ‘জুমবাংলা’ নামে একটি ওয়েব পোর্টাল থেকে প্রকাশিত ‘নিজেই নিজেকে বিয়ে করতে চান শ্রীলেখা’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদের প্রথম অনুচ্ছেদ থেকে নেওয়া হয়েছে। এখানে শুধু শ্রীলেখার জায়গায় পরীমণির নাম ব্যবহার করা হয়েছে।
গত ১৩ জুন প্রথমে ফেসবুকে ও পরে রাতে সংবাদ সম্মেলন করে চিত্রনায়িকা পরীমণি তাঁকে ঢাকা বোট ক্লাবে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগ করেন। পরদিন সাভার থানায় ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও অমির নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও চারজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টা ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন পরীমণি। ওইদিন বিকাল ৩টার দিকে রাজধানীর উত্তরা থেকে নাসির ও অমিসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
২৩ জুন আদালতে শুনানির সময় আসামি নাসির উদ্দিন মাহমুদের আইনজীবী ডিএনএ টেস্ট করার কথা তুলেছিলেন। পরে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। কিন্তু ডিএনএ টেস্টের ব্যাপারে আদালতের কোনো নির্দেশের খবর মূলধারার গণমাধ্যমে পাওয়া যায়নি।
এদিকে মঙ্গলবার (২৯ জুন) অভিনেত্রী পরীমণিকে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টার মামলায় নাসির উদ্দিনকে পরবর্তী কার্যদিবস পর্যন্ত জামিন দেন ঢাকার সিনিয়র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহজাদী তাহমিদার আদালত। মামলাতে নাসির উদ্দিন ও তুহিন সিদ্দিকী অমির কাছে পাঁচ হাজার টাকার মুচলেকা নেওয়া হয়।
সিদ্ধান্ত
চিত্রনায়িকা পরীমণির ডিএনএ টেস্টের কথা আদালতে তুলেছিলেন মামলার আসামি ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদের আইনজীবী। তবে পরবর্তীতে পরীমণির ডিএনএ টেস্ট সংক্রান্ত কোনো খবর মূলধারার গণমাধ্যমে আসেনি। ভাইরাল হওয়া প্রতিবেদনের ভেতরের অংশেও এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য নেই। সুতরাং ‘ডিএনএ টেস্টে ফেঁসে গেলেন পরী’- শিরোনামটি বিভ্রান্তিকর।