রাজনৈতিক কারণেই বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্য পেয়েছিলেন ছাত্রনেতা মাসুদ পারভেজ। পরে জাতির জনকের কথাতেই চলচ্চিত্রে থিতু হন তিনি। প্রযোজক ও অভিনেতা মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা বলেছেন তাঁর দেখা বঙ্গবন্ধুর কথা।
ইতিহাস বলে, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চলচ্চিত্র নিয়েও অনেক বড় স্বপ্ন দেখেছিলেন। ১৯৫৭ সালে প্রাদেশিক সরকারের মন্ত্রী থাকাকালে তিনিই সংসদে চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (এফডিসি) বিল উত্থাপন করেন এবং এফডিসি বিল পাস হয়। তিনিই বুঝিয়েছেন, আমরাও ছবি বানাতে পারি। তার আগে তো পাকিস্তানিরা বলত আমরা ছবি বানাতে পারি না।
আমাদের আড্ডার মাঝে অনেক সময় সৈয়দ নজরুল ইসলাম কিংবা তাজউদ্দীন সাহেবরা আসতেন। তখন উনি আমাদের বলতেন, ‘যা ভিতরে যা।’ আমরা ভিতরে চলে যেতাম। তখন মায়ের সঙ্গে দেখা হতো। বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব। যদিও আমরা তাঁকে ভাবি ডাকতাম। তিনি আমাদের দেখে বলতেন, ‘তোরা আসছ? বস, দেখি তোদের কী দিতে পারি।’ মায়ের কাছে যেমন সন্তানরা আবদার করে। আমরা এইটা-ওইটা বায়না ধরতাম। আজ এটা খাব, ওটা খাব। হৈচৈ করতাম। এই যে তাঁকে জ্বালাতন করতাম, কখনো তিনি বিরক্ত হতেন না। তিনি খাবার নিয়ে আসতেন। আমাদের সঙ্গে বসে কথা বলতেন। এটা বঙ্গবন্ধুও জানতেন। এ জন্যই আমাদের যাওয়ার আগে তিনি বলতেন, ‘যা ভিতর থেকে ঘুরে যা তোরা।’ এই সম্পর্কগুলো আসলে বলে বোঝানো যাবে না। আমরা ছিলাম বঙ্গবন্ধুর ঘরের সন্তান। আসলে তাঁর সঙ্গে অন্য কারও তুলনা হয় না।
আমি সেই গুরুবাক্যকে শিরোধার্য মনে করে চলচ্চিত্রজগতেই রয়ে গেলাম। এরপর দ্বিতীয় ছবি করলাম ‘মাসুদ রানা’। এরপর থেকে আমার চলচ্চিত্র ইতিহাস শুরু। বঙ্গবন্ধু যদি সেদিন না বলতেন, ‘তুই চলচ্চিত্রে থেকে যা’, তাহলে আজ সারা বাংলাদেশসহ পৃথিবীর মানুষ আমাকে চলচ্চিত্রের নায়ক-প্রযোজক হিসেবে চিনতেন না।
অনুলিখন: মীর রাকিব হাসান