‘আজ আমার জীবনের স্মরণীয় একটি দিন, অনেক সাধনার পর আজ আমি আমার জীবনের প্রথম শিক্ষক মানিকগঞ্জের শুক্লা মিসকে খুঁজে পাই, যিনি আমার জীবনের প্রথম শিক্ষাগুরু। আমরা একসঙ্গে ইফতার করলাম, কত গল্প, কত কথা! অসম্ভব সুন্দর কিছু সময় কাটালাম ঘিওরে মিসের দেবরের বাসায়, সবাই শুক্লা মিসের জন্য দোয়া করবেন।’ নিজের ফেসবুক পেজে বেশ কয়েকটি ছবিসহ এই ক্যাপশন লিখে পোস্ট করেছেন চলচ্চিত্র অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদ।
প্রথম স্কুল, প্রথম ক্লাস টিচার—স্মৃতিতে আগলে রেখেছেন চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া শ্রেষ্ঠ অভিনেতা ফেরদৌস। একটু সান্নিধ্য পেতে খুঁজে ফিরেছেন বহু বছর। কাজের ব্যস্ততা আর যোজন পথের দূরত্বে কেটে গেছে ৪৩টি বছর। অবশেষে দেখা পেলেন জীবনের প্রথম শিক্ষক প্রিয় শুক্লা ম্যাডামকে। ফেরদৌসের প্রথম শিক্ষক শুক্লা রায় এখন মেলবোর্ন থাকেন মেয়ের কাছে। সম্প্রতি বাংলাদেশে এসেছেন।
গতকাল বিকেল ৫টার দিকে মানিকগঞ্জের ঘিওরে শিক্ষাগুরুর সাক্ষাৎ পেয়ে আপ্লুত ফেরদৌস। আপ্লুত শিক্ষক। সেদিনের ছোট্ট ছাত্র আজ দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেতা, প্রযোজক, উপস্থাপক। কত নামডাক! কোটি কোটি মানুষ তাঁকে চেনে। তাঁকে নিয়ে কত কথা, কত স্মৃতি। পরম মমতায় ছাত্রকে জড়িয়ে ধরতেই শিক্ষক শুক্লা রায় চোখের অশ্রু ধরে রাখতে পারলেন না।
ফেরদৌস এসেছেন শুনে এক নজর দেখার জন্য এ সময় শত শত মানুষ ভিড় করে প্রফেসর অজয় রায়ের বাসভবনে। সবার সঙ্গেই হাসিমুখে কথা বলেন, ছবি তোলেন ফেরদৌস। বলেন, ‘আজ আমি ভীষণ খুশি। বহু বছর পর আমার প্রিয় শিক্ষককে খুঁজে পেয়েছি।’ দোয়া চেয়ে বিদায় নেন ম্যাডামের কাছ থেকে। এ যেন চলচ্চিত্রের বিদায়ের বিষাদ পর্ব। সৃষ্টি হয় এক আবেগঘন পরিবেশের। ফেরদৌসের চলে যাওয়া পথের পানেই অপলক তাকিয়ে থাকেন এই স্কুলশিক্ষক। হাত তুলে আশীর্বাদ করেন। ভেজা চোখদুটো ঝাপসা হয়ে ওঠে দুজনেরই।