একটা ডাব, ছাতার নিচেই হালকা ‘সান বাথ’ নিয়ে হয়তো সদ্য উঠেছেন, সামনে দেখতে পেলেন আলিয়া ভাট নীল রঙের বিকিনি পরে চুলের পানি ঝাড়তে ঝাড়তে আপনার দিকে এগিয়ে আসছেন। আপনি ভাবলেন স্বপ্ন নাকি? চোখ কচলে দেখলেন হ্যাঁ, আলিয়াই বটে। আর সে পায়ে পায়ে এগিয়ে আসছে। আলিয়া আপনার চোখের সামনে যতই বড় হচ্ছে আপনার মুখের হাঁ-টিও পাল্লা দিয়ে বড় হচ্ছে! কিন্তু ‘কাহানি মে ট্যুইস্ট’। আপনাকে পাশ কাটিয়ে আলিয়া চলে গেলেন আপনার পেছনের দিকের এক পুরুষের কাছে। সেখানেও চমকাবার পালা। তিনি আর কেউ নন স্বয়ং রণবীর কাপুর। দুবার চোখ কচলে দেখলেন যে নেশার ঘোরে আপনি ভুল দেখেননি। আলিয়া আর রণবীর সত্যিই আপনার সঙ্গে মালদ্বীপে ছুটি কাটাচ্ছেন। আলিয়া ও রণবীর করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন, সেরে উঠেই পাড়ি জমিয়েছেন মালদ্বীপে। বর্তমাসে তাঁরা সেখানেই অবস্থান করছেন।
কিন্তু আচমকা সবাই মিলে মালদ্বীপে ছুটেছিলেন কেন? শুধুই কি সস্তা প্যাকেজ আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লোভে? না। মালদ্বীপে ঘুরতে যাওয়ার আরও অনেক কারণ আছে।
কর্মসংস্থান, পর্যটন এবং চিকিৎসার আদান–প্রদানের উদ্দেশ্যে ভারত এবং মালদ্বীপের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তি অনুযায়ী, দুই দেশের নাগরিক সহজেই একে অপরের দেশে যাতায়াত করতে পারবেন। টিকিট কিংবা ভিসা মিলবে নির্ঝঞ্ঝাটে। করোনা সংক্রমণের কারণে কয়েক মাস সেই যাতায়াত বন্ধ ছিল। এর ফলে দুই দেশেরই আর্থিক ক্ষতি হচ্ছিল ব্যাপক। অবশেষে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতেই দুই দেশের মধ্যে চুক্তির মাধ্যমে বিমান চলাচল শুরু হয়। করোনা সতর্কতায় বিশ্বের অনেক দেশে এখনো ভারতীয়দের প্রবেশ নিষেধ। কিংবা প্রবেশ করলেও কোয়ারেন্টিনে থাকতে হয়। কিন্তু মালদ্বীপে যেতে করোনামুক্ত থাকার ভারতীয় সার্টিফিকেট হলেই
চলে।
নভেম্বর থেকে এপ্রিল মালদ্বীপ ঘোরার আদর্শ সময়। এই কয়েক মাস সেখানকার আবহাওয়া মনোরম থাকে। বৃষ্টিও কম হয়। বলিউড তারকাদের যে আবার কোনো মুহূর্তেরই ফটোশুট করা দরকার। তাই হালকা রোদ গায়ে মেখে ছবি তুলতে সুবিধা হয়। মেকআপও নষ্ট হয় না। একই অজুহাত সবার ক্ষেত্রে খাটে। ফটোশুট না হলেও সেলফি তো তোলাই যায়। এই জন্য মনোরম আবহাওয়াও খুব কাজে
দেয়।
অবশ্য শুধু সেলফি তুলতে কেউ পয়সা খরচ করে মালদ্বীপে যান না। মালদ্বীপে আছে প্রায় বারো শটি ছোট–বড় দ্বীপ। নিজের ইচ্ছেমতো দ্বীপ বেছে একান্তে ছুটি কাটানোর আদর্শ জায়গা এটি। এক একটি দ্বীপ হলো এক একটি রিসোর্ট। আর পাঁচটা দ্বীপের সমুদ্রসৈকতের মতো ভিড় নেই সেখানে। তারকারা শান্ত পরিবেশে একান্তে সময় কাটাতে চান। তাই কোনো ফাঁকা দ্বীপে গিয়ে আস্তানা নেন। তা ছাড়া, সেখানকার প্রতিটি হোটেল এবং রিসোর্টের নিরাপত্তা খুবই কড়া। সঙ্গে কঠোরভাবে মেনে চলা হয় কোভিড গাইডলাইন। তাই সেখানে ছুটি কাটাতে যাওয়াটাও অনেক নিরাপদ। ভারতীয় পাসপোর্ট থাকলে কোয়ারেন্টিনে থাকতে তো হয়ই না, পাশাপাশি ৩০ দিনের ফ্রি ভিসাও মেলে।
চুক্তি অনুযায়ী মালদ্বীপে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ সব তারকার কাছে থাকে একেবারে বিনা মূল্যে। অর্থাৎ প্রত্যেক তারকা মালদ্বীপে থাকতে পারেন বিনা মূল্যে। তবে তারকাদের শর্ত দেওয়া হয় যে শুধু ঘুরে বেড়ালে চলবে না। মালদ্বীপে থাকাকালীন কিছু ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করতে হবে।
পাসপোর্টের মেয়াদ কমপক্ষে ছয় মাস রয়েছে, এমন যে কেউ মালদ্বীপ ভ্রমণ করতে পারেন। দেশটিতে যেতে আগে থেকে ভিসা করা লাগে না। কাগজপত্র ঠিক থাকলে মালদ্বীপ এয়ারপোর্টে আসার পর অন- অ্যারাইভাল ভিসা পাবেন। এ জন্য লাগবে বিমানের রিটার্ন টিকিট, হোটেল বুকিং, পর্যাপ্ত ডলার (এক হাজার ডলার বা তার বেশি), চাকরি বা ব্যবসায়ের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র।