অস্কারজয়ী ভারতীয় সুরকার ও গায়ক এ আর রাহমানের জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়—ধর্মান্তর এবং সুফি ইসলাম গ্রহণ। এ নিয়ে একাধিকবার খোলাখুলি কথা বলেছেন তিনি। ২০১৫ সালে প্রকাশিত নাসীর মুন্নি কবিরের লেখা ‘এ আর রাহমান: দ্য স্পিরিট অব মিউজিক’ গ্রন্থে তিনি জানান কীভাবে একজন হিন্দু জ্যোতিষী তাঁর জন্য ‘আল্লারাখা রাহমান’ নামটি প্রস্তাব করেছিলেন। ধর্মান্তরের আগে তাঁর নাম ছিল এ এস দিলীপ কুমার।
এ আর রাহমানের কথায় উঠে আসে তাঁর আধ্যাত্মিক যাত্রার শুরুর দিকের কথা। তাঁর বাবার অকালমৃত্যু তাঁকে আধ্যাত্মিকতার পথে চালিত করে। তিনি জানান, মা ছিলেন ধর্মপ্রাণ হিন্দু, আধ্যাত্মিকতার প্রতি সর্বদা তিনি আগ্রহী ছিলেন। তাঁদের বাড়িতে হিন্দু ধর্মীয় ছবির পাশাপাশি মাদার মেরি এবং মক্কা-মদিনার পবিত্র স্থানের ছবিও ছিল।
এ আর রাহমান স্মরণ করেন, নতুন পরিচয়ের সন্ধানে থাকার সময়ই তাঁর ছোট বোনের কোষ্ঠী বিচার করানোর জন্য তাঁরা এক হিন্দু জ্যোতিষীর কাছে যান। সেই জ্যোতিষীই তাঁকে ‘আবদুর রহমান’ এবং ‘আবদুর রহিম’ নামের পরামর্শ দেন। এ আর রাহমান বলেন, ‘সেই মুহূর্তে আমার “রাহমান” নামটি ভীষণ পছন্দ হয়।’ এভাবেই, একজন হিন্দু জ্যোতিষীর পরামর্শে তিনি নতুন মুসলিম নাম পান।
সুফি ইসলাম গ্রহণের সিদ্ধান্তের বিষয়ে এ আর রাহমান স্পষ্ট করে বলেন, এই পথে আসার জন্য কারও কাছ থেকে কোনো প্রকার চাপ ছিল না। তাঁর মতে, ‘সুফিবাদের পথে কেউ কাউকে জোর করে ধর্মান্তরিত করে না। আপনার মন থেকে এলে তবেই আপনি অনুসরণ করবেন।’
বিষয়টি আরেকটু ব্যাখ্যা করে বলেন, জীবনের পথ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে তাঁর উপলব্ধি ছিল—একটি নির্দিষ্ট পথে স্থির থাকা ভালো। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সুফিবাদের পথটি আধ্যাত্মিকভাবে তাঁর ও তাঁর মায়ের জীবন উন্নত করেছে। তিনি অনুভব করেন, এই পথটিই তাঁদের জন্য সেরা ছিল, তাই তাঁরা সুফি ইসলামকে গ্রহণ করেন। যেহেতু তাঁরা শিল্পী ছিলেন, তাই ধর্মান্তর নিয়ে তাঁদের আশপাশের মানুষজন বিশেষ মাথা ঘামাননি।