আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সাড়ে তিন কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ মহির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিলের অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ সোমবার দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। শিগগির অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হবে বলে জানান তিনি।
দুদকের তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মহিউদ্দিন আহমেদ মহি দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৪৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬৫ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। সমবায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি অবৈধভাবে আয় করা অর্থ বৈধ করার উদ্দেশ্যে ব্যবসার ছদ্মাবরণে ৩ কোটি ৫৫ লাখ ৪০ হাজার ৫২৯ টাকার জ্ঞাত আয়ের উৎসবহির্ভূত সম্পদ ভোগ ও দখলে রাখেন।
তদন্তে দেখা যায়, মহিউদ্দিন দুদকে দাখিল করা বিবরণীতে স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে মোট ৩ কোটি ৯৭ লাখ ৭৯ হাজার ৩৩৩ টাকার সম্পদের হিসাব দিয়েছেন। তবে যাচাইকালে তাঁর নামে ৫ কোটি ১২ লাখ ৫৩ হাজার ২১৩ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। অর্থাৎ তিনি প্রায় ৪৬ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন।
এ ছাড়া দুদকের তদন্তে তাঁর নিট সম্পদ, পারিবারিক ব্যয়সহ মোট ১০ কোটি ২১ লাখ ৪ হাজার ৬৭৩ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। এর বিপরীতে তাঁর বৈধ আয় হিসেবে পাওয়া গেছে মাত্র ৬ কোটি ৬৫ লাখ ৬৪ হাজার ১৪৪ টাকা। সেই হিসাবে তাঁর জ্ঞাত আয়ের উৎসবহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ ৩ কোটি ৫৫ লাখ ৪০ হাজার ৫২৯ টাকা।
সম্পদের তথ্য গোপন, মিথ্যা তথ্য প্রদান, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদক আইন, ২০০৪-এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত বছরের ১৬ অক্টোবর ২ কোটি ৭০ লাখ ৬৩ হাজার ৯৮ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সমবায় ব্যাংকের সাবেক এই ভাইস চেয়ারম্যান ও চেয়ারম্যানের নামে মামলা দায়ের করে দুদক।
প্রসঙ্গত, মহিউদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সাবেক সহসভাপতি ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হলে দলটির শীর্ষ নেতাদের মতো তিনিও আত্মগোপনে চলে যান।