কয়েক দিন ধরে গ্রীষ্মের তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। এর মধ্যেও মৌলভীবাজারের চা-শ্রমিকদের দুই-তিন শিফটে কাজ করাচ্ছেন বাগানমালিকেরা। এতে কমলগঞ্জ উপজেলার একটি চা-বাগানে কাজের শেষের দিকে অসুস্থ হয়ে পড়া চার শ্রমিকের মধ্য দুই শ্রমিক মারা গেছেন। এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন বাগানে আটজন অসুস্থ হওয়ার খবরও পাওয়া গেছে।
চা-শ্রমিকেরা জানান, গতকাল বুধবার কমলগঞ্জের ডানকান ব্রাদার্স শমশেরনগর চা-বাগানের ফাঁড়ি দেওছড়ায় তিন শিফটে কাজ করেন ইন্দ্রা দ্বিবেদী (৫০) ও সঞ্জিতা রবিদাস (৩০)। কাজের শেষের দিকে তাঁরা কিছুটা অসুস্থ বোধ করেন। এরপর বাড়ি ফিরে রাতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন সঞ্জিতা রবিদাসকে শমশেরনগর ক্যামেলিয়া ডানকান হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। আর ইন্দ্রা দ্বিবেদী (৫০) বাড়িতেই মারা যান।
এ ছাড়া দেওছড়া চা-বাগানে দুজন, শমশেরনগর চা-বাগানে তিনজন, চাতলাপুর চা-বাগানের একজন, আলীনগর চা-বাগানে দুজনসহ বিভিন্ন চা-বাগানের শ্রমিকেরা অসুস্থ হয়েছেন বলে জানা গেছে।
চা-শ্রমিকেরা বলেন, ‘আমরা হিট স্ট্রোক কী বুঝি না। গরম কিংবা ঝড়বৃষ্টি হলেও আমাদের সময়মতো কাজে আসতে হয়। গরমের মধ্যে কাজ করে আমাদের অনেকেই অসুস্থ হচ্ছেন। আমাদের পায়ে নেই জুতা আর মাথার ওপর সূর্য। একসঙ্গে নিচ ও ওপর থেকে গরম লাগে।’
শমশেরনগর ক্যামেলিয়া ডানকান হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. বাহা উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গতকাল রাতে আমাদের কাছে মৃত্যু অবস্থায় একজনকে নিয়ে আসা হয়েছিল। আমার কাছে মনে হয়েছে, সে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।’
শমশেরনগর চা-বাগানের ব্যবস্থাপক জাকির হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চা-শ্রমিক হিট স্ট্রোকে মারা যাওয়ার বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। শ্রমিকেরা যদি সকালে কাজে আসে তাতেও আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’
কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহবুবুল আলম ভূইয়া বলেন, ‘হিট স্টোকের ভয়াবহতা সম্পর্কে বেশির ভাগ মানুষ সচেতন নয়। হিট স্টোকে হলে দ্রুত সময়ে বিপদ ঘটতে পারে। শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। তাই শিশু থেকে বয়স্ক সবাইকে গরম থেকে সতর্ক থাকতে হবে।’