কুয়েতের কৃষি অঞ্চল আবদালি এলাকায় আগুনে দগ্ধ হয়ে তিন বাংলাদেশির মৃত্যুর হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজনের বাড়ি সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায়। মা-বাবা ও স্ত্রী-সন্তানদের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য ২৫ বছর আগে কুয়েতে গিয়ে কষ্টের প্রবাসজীবন শুরু করেছিলেন খোরশেদ আলম (৪৮)।
সচ্ছলতা ফেরাতে না পারলেও খোরশেদের আয়-রোজগারে কোনোমতে চলে যাচ্ছিল তাঁর পরিবার। কিন্তু একটি অগ্নিকাণ্ড ছাই করে দিল খোরশেদ ও তাঁর পরিবারের সব স্বপ্ন। তাঁর গ্রামের বাড়িতে এখন চলছে মাতম। বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা ও স্ত্রী। মা-বাবা ও স্ত্রী-সন্তানদের আর্তনাদে ভারী হয়ে আছে খোরশেদের বাড়ির চারপাশ।
খোরশেদ গোয়াইনঘাট উপজেলার বাঘবাড়ী গ্রামের নেছার আলীর ছেলে। পরিবারে তাঁর তিন ছেলেসন্তান রয়েছে।
খোরশেদ আলমের স্ত্রী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন আমার স্বামী। তাঁর এমন মৃত্যুতে আমরা দুই চোখে এখন অন্ধকার দেখছি। তা ছাড়া, আমার সন্তানেরা তাদের বাবাকে হারানোর সংবাদে দিশেহারা হয়ে গেছে। আমার শাশুড়ি বারবার অজ্ঞান হচ্ছেন ছেলের মৃত্যুর সংবাদ শুনে।’
জানা যায়, গত শনিবার স্থানীয় সময় রাত ১টার দিকে ওই খামারে আগুন লাগে। এ অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়ে সিলেট বিভাগের তিনজনের মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটেছে। এর মধ্যে খোরশেদ একজন। ওই খামারে মোট ২০ জন বাংলাদেশি শ্রমিক কাজ করতেন। এই অগ্নিকাণ্ডে খোরশেদ এবং কামাল উদ্দিন (৫১) ও মোহাম্মদ ইসলাম (৩২) নামের সিলেট বিভাগের তিনজন মারা গেছেন। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আহত মোহাম্মদ আলকাছ নামে একজন প্রবাসী বাংলাদেশি স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকিরা চিকিৎসা নিয়ে ঘরে ফিরেছেন।
এই অগ্নিকাণ্ডে নিহত কামাল উদ্দিনের বাড়ি মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার মাগুরা গ্রামে। আর নিহত মোহাম্মদ ইসলামের বাড়ি সিলেট জেলার কানাইঘাট উপজেলার বাটিভারা ফইত গ্রামে।