গত দুদিন পর সিলেট-সুনামগঞ্জে আবারও কমতে শুরু করেছে সুরমা নদীর পানি। আজ শুক্রবার ভোররাত থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হলেও সকাল থেকে এসব নদ-নদীর পানি কমতে দেখা গেছে। আবার দুপুরে আকাশে সূর্যের দেখা মেলায় বানভাসি মানুষের মাঝে স্বস্তি সঞ্চার হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র বলছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে ১৩ সেন্টিমিটার, সিলেট পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার ও সুনামগঞ্জের ছাতক পয়েন্টে ৪ সেন্টিমিটার ও সুনামগঞ্জ পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার কমেছে। কুশিয়ারা নদীর অমলসীদ পয়েন্টে ৮, শেওলা ৭, শেরপুর ৩ ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ২ সেন্টিমিটার কমেছে একই সময়ে। একইভাবে সিলেটের লোভা নদের লোভাছড়া পয়েন্টে ২২, সারি নদের সারিঘাট পয়েন্টে ৬৯ সেন্টিমিটার ও সুনামগঞ্জে যাদুকাটার শক্তিয়ারখলা পয়েন্টে ১ সেন্টিমিটার পানি কমেছে। তবে ধলাই নদের ইসলামপুর পয়েন্টে সকাল বাড়লে সন্ধ্যায় কমে আগের অবস্থানে চলে যায়।
এর আগে টানা কয়েক দিনের বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেট-সুনামগঞ্জে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত ছিল। ফের দেখা দিয়েছিল বন্যার শঙ্কা। তবে সকাল থেকে নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল থেকে পানিও নেমেছে কিছুটা।
সিলেট নগরীর ছড়ার পাড়ের বাসিন্দা রিয়াদ কামাল বলেন, ‘সকাল থেকে অনেক পানি কমেছে। এভাবে কমলে দু-এক দিনের মধ্যে সব জায়গা শুকিয়ে যাবে। মানুষ স্বাভাবিকভাবে ঈদটা করতে পারবে। যদি বন্যায় অনেকেরই ঈদ আনন্দ ভাসিয়ে নিয়ে গেছে।’
সিলেটের গোয়াইনঘাটের ফতেহপুর গ্রামের রুস্তুম আলী বলেন, ‘পানি তো কমতেছে আজ। কিন্তু আমরার তো কিচ্ছু নাই সব শেষ। তবুও পানি কমলে কাজ-কাম করতে পারমু। এই অবস্থা থাকলেও না খেয়ে মরতে হবে।’
তেঘরিয়া এলাকার সালমান আহমদ বলেন, ‘বৃষ্টি কমায় নদীর পানি কমছে। রাতে তেমন একটা বৃষ্টি হয়নি। আবার বৃষ্টি হলে পানি বাড়বে। আসলে এই জুন-জুলাই মাসটা আসলে আমরা ভয়ে থাকি। প্রতি বছর এখানে এই সময়টা পানি আসে।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এসএম শহিদুল ইসলাম শুক্রবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘ভারতের মেঘালয়ে কম বৃষ্টিপাত হওয়ায় এবং আমাদের সিলেট-সুনামগঞ্জেও বৃহস্পতিবার তেমন একটা বৃষ্টিপাত না হওয়ায় সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তবে উজানে যদি আবারও ভারী বৃষ্টিপাত হয় তাহলে নদ-নদীর পানি বেড়ে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হবে।’
প্রকৌশলী আরও বলেন, ‘সিলেটে দুই-এক দিন বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকলেও বন্যার আশঙ্কা নেই। এ ছাড়া নদ-নদীর পানিও কমে যাচ্ছে।’