সিরাজগঞ্জে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ প্রকল্প দ্রুত অনুমোদন ও বাস্তবায়নের দাবিতে রেলপথ অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার সকালে উল্লাপাড়া রেলস্টেশন-সংলগ্ন রেলগেট এলাকায় এই কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।
এতে সকাল ৯টা থেকে রাজধানীর সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের রেল যোগাযোগ বন্ধ থাকে। বেলা ৩টার দিকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার মহাসড়ক অবরোধের নতুন কর্মসূচি ঘোষণার পর শিক্ষার্থীরা রেলপথ ছেড়ে দেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে যৌক্তিক দাবি জানালেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ইতিবাচক সাড়া মেলেনি। গত রোববার তাঁরা ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছিলেন, কিন্তু দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে রেল অবরোধ কর্মসূচি পালন করতে হচ্ছে।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিহাব হোসেন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা আগামীকাল যমুনা সেতুর পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কে বেলা ১১টায় অবরোধ করব। আমাদের স্থায়ী ক্যাম্পাসের ঘোষণা না আসা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় কার্যালয় সূত্র জানায়, শিক্ষার্থীদের রেলপথ অবরোধের কারণে আন্তনগর ট্রেন সিল্কসিটি এক্সপ্রেস লাহিড়ী মোহনপুর স্টেশন, ধূমকেতু এক্সপ্রেস জামতৈল স্টেশন, চিলাহাটি এক্সপ্রেস ভাঙ্গুড়া স্টেশন, একতা এক্সপ্রেস যমুনা সেতু পূর্ব পার ইব্রাহিমাবাদ স্টেশন, রংপুর এক্সপ্রেস সয়দাবাদ স্টেশন ও চিত্রা এক্সপ্রেস ঈশ্বরদী স্টেশনে আটকা পড়ে।
এদিকে হঠাৎ রেল যোগাযোগ বন্ধ থাকায় যাত্রীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। উল্লাপাড়া স্টেশনে ঢাকা অভিমুখী সিল্কসিটি এক্সপ্রেসের জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রী কামাল (৫০) বলেন, সকাল ৯টা থেকে অপেক্ষা করেও ট্রেন পাননি। স্টেশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ট্রেনটি লাহিড়ী মোহনপুর স্টেশনে প্রায় চার ঘণ্টা ধরে আটকে আছে।
ওমরা হজযাত্রী রমজান আলী ও শামীম রেজা জানান, সড়ক অবরোধ এড়াতে বাসের পরিবর্তে ট্রেনের টিকিট কেটেছিলেন। কিন্তু রেল অবরোধের কারণে টিকিট ফেরতও পাননি। শেষ পর্যন্ত বাসে করে ঢাকায় যেতে বাধ্য হন, কারণ রাত ১০টায় তাঁদের ফ্লাইট। স্টেশনে শতাধিক যাত্রী দীর্ঘসময় অপেক্ষা করেছেন। অনেকে বিকল্প পথে গন্তব্যে রওনা দেন।
এ বিষয়ে উল্লাপাড়া রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী স্টেশনমাস্টার মনিরুল ইসলাম জানান, সকাল ৯টা থেকে রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত এই পথে ১৪টি আন্তনগর ট্রেন চলাচলের কথা ছিল। অবরোধের কারণে বেলা ২টা পর্যন্ত নির্ধারিত ৯টি ট্রেন চলাচল করতে পারেনি।
সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নজরুল ইসলামের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে সরকারের উপদেষ্টাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। মানুষের ভোগান্তি এড়াতে দ্রুত অবরোধ তুলে নেওয়ার জন্য শিক্ষার্থী, উপাচার্য ও শিক্ষকদের অনুরোধ জানানো হয়েছে।